আকিদা সংক্রান্ত জরুরি কিছু প্রশ্ন ও উত্তর 

প্রকাশিত: ২:০৪ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩

ইসলামিক জার্নাল ডেস্কঃ
১. প্রশ্নঃ আমাদের সৃষ্টিকর্তার নাম কি❓
উত্তরঃ আল্লাহ্‌।

২. প্রশ্নঃ আল্লাহর কতগুলো নাম রয়েছে❓
উত্তরঃ আল্লাহ তা’আলার নাম অসংখ্য-অগণিত।

৩. প্রশ্নঃ আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্‌ কোথায় আছেন❓
উত্তরঃ রহমান আরশ এর উপরে উঠেছেন । (সূরা ত্বহাঃ৫

৪. প্রশ্নঃ আল্লাহর আরশ কোথায় আছে❓
উত্তরঃ সাত আসমানের উপর।

৫. প্রশ্নঃ আল্লাহ কি সর্বস্থানে বিরাজমান❓
উত্তরঃ না। আল্লাহ্‌ সবজায়গায় বিরাজমান নন। তিনি সপ্তকাশের উপর সুমহান আরশে উঠেছেন (সূরা ত্বাহাঃ ৫) (তাই আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ তালা আসমানের উপরে আরশের উপরে আছেন সেখান থেকেই তিনি সবকিছুর উপরে ক্ষমতাবান, কখনো সৃষ্টির মধ্যে থাকে না,স্রষ্টা সৃষ্টি থেকে আলাদা।)

৬. প্রশ্নঃ আল্লাহর কাজ কি❓
উত্তরঃ সৃষ্টি করা, রিযিক প্রদান, বৃষ্টি বর্ষণ, লালন-পালন করা, সাহায্য করা, জীবন-মৃত্যু প্রদান, পরিচালনা করা, সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব করা, তত্বাবধান করা ইত্যাদি ইত্যাদি।

৭. প্রশ্নঃ তাওহীদ কাকে বলে❓
উত্তরঃ তাওহীদ অর্থ একত্ববাদ। পরিভাষায়ঃ ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহকে একক নির্দিষ্ট করার নাম তাওহীদ।

৮. প্রশ্নঃ তাওহীদ কত প্রকার?
উত্তরঃ তাওহীদ ৩ প্রকার।

৯. প্রশ্নঃ তিন প্রকার তাওহীদ কি কি?
উত্তরঃ (১) তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্‌ বা কর্ম ও পরিচালনার একত্ববাদ (২) তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্‌ বা দাসত্বের একত্ববাদ (৩) তাওহীদে আসমা ওয়া ছিফাত বা নাম ও গুণাবলীর একত্ববাদ।

১০. প্রশ্নঃ তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্‌ কাকে বলে❓
উত্তরঃ আল্লাহ্‌ তাঁর কর্ম সমূহে একক- তাঁর কোন শরীক নেই, একথা মেনে নেয়ার নাম তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্‌

১১. প্রশ্নঃ তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্‌ কাকে বলে❓
উত্তরঃ বান্দার ইবাদত-বন্দেগী ও দাসত্ব এককভাবে আল্লাহর জন্যে নির্দিষ্ট করার নাম তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্‌।

১২. প্রশ্নঃ তাওহীদে আসমা ওয়াস্‌ সিফাত কাকে বলে?
উত্তরঃ কুরআন ও হাদীছে আল্লাহর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম ও গুণাবলী উল্লেখ রয়েছে, যা তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ও পরিপূর্ণতার প্রমাণ বহন করে, সেগুলোকে কোন প্রকার ধরণ-গঠন নির্ধারণ না করে বা অস্বীকার না করে সেভাবেই মেনে নেয়ার নাম তাওহীদে আসমা ওয়াস্‌ সিফাত।

১৩. প্রশ্নঃ তাওহীদে রুবূবিয়্যাহ্‌র উদাহরণ কি❓
উত্তরঃ সৃষ্টি করা, রিযিক দেয়া, বৃষ্টি দেয়া, লালন-পালন করা, সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব করা, তত্বাবধান করা ইত্যাদি।

১৪. প্রশ্নঃ তাওহীদে উলূহিয়্যাহ্‌র উদাহরণ কি❓
উত্তরঃ ঈমান, ভয়-ভীতি, আশা-আকাঙ্খা, ভালবাসা, দু’আ-প্রার্থনা, সাহায্য কামনা, উদ্ধার কামনা, রুকূ-সিজদা ইত্যাদি।

১৫. প্রশ্নঃ তাওহীদে আসমা ওয়া ছিফাতের উদাহরণ কি❓
উত্তরঃ الرحمن আর্‌ রাহমান, السميع আস্‌ সামী’ (শ্রবণকারী) البصير আল বাছীর (মহাদ্রষ্টা), العلو আল ঊলু (সুউচ্চ) ইত্যাদি।

১৬. প্রশ্নঃ আল্লাহর ৯৯টি নাম মুখস্থ- করার ফযীলত কি❓
উত্তরঃ মু্খস্থ- করে আমল করলে বিনিময় জান্নাত।

১৭. প্রশ্নঃ ‘মুমিনের কলব আল্লাহর আরশ’ এটা কার কথা?
উত্তরঃ এটা মানুষের বানানো কথা। আল্লাহ বা রাসূলের কথা নয়। (জাল হাদীছ)

১৮. প্রশ্নঃ আল্লাহ কি নিরাকার❓
উত্তরঃ না। কেননা তাঁর অসি-ত্ব ও সত্তা আছে। যার সত্তা ও অসি-ত্ব থাকে তাকে নিরাকার বলা যায় না।

২০. প্রশ্নঃ আল্লাহ যদি নিরাকার না হন, তবে তাঁকে কি দেখা সম্ভব❓
উত্তরঃ হ্যাঁ, তাঁকে দেখা সম্ভব। তবে এ দুনিয়ায় চর্ম চোখে সম্ভব নয়। আখেরাতে জান্নাতীগণ আল্লাহকে দেখবেন। (সূরা ক্বিয়ামাহ্‌ঃ ২২-২৩, বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ)

২১. প্রশ্নঃ ঈমান কাকে বলে❓
উত্তরঃ ঈমান মানে বিশ্বাস। পরিভাষায়ঃ অন-রে বিশ্বাস, মুখে স্বীকার ও কর্মে বাস-বায়নকে ঈমান বলে।

২২. প্রশ্নঃ ঈমান কি কমে ও বাড়ে❓
উত্তরঃ হ্যাঁ, ঈমান কমে ও বাড়ে।

২৩. প্রশ্নঃ কিভাবে ঈমান কমে বাড়ে❓
উত্তরঃ সৎকাজের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে, আর অসৎ কাজ করলে ঈমান কমে।

২৪. প্রশ্নঃ ঈমানের শাখা কতটি❓
উত্তরঃ সত্তরের অধিক।

২৫. প্রশ্নঃ ঈমানের সর্বোচ্চ স্তর কি❓
উত্তরঃ কালেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ পাঠ করা।

২৬. প্রশ্নঃ ঈমানের সর্বনিম্ন শাখা কি❓
উত্তরঃ রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা।

২৭. প্রশ্নঃ ঈমানের স্তম্ভ কয়টি❓ কি কি❓
উত্তরঃ ঈমানের স্তম্ভ ৬টি। সেগুলো হচ্ছেঃ (১) আল্লাহ (২) ফেরেশতাকুল (৩) আসমানী কিতাব (৪) নবী-রাসূল (৫) শেষ দিবস ও (৬) তক্বদীরের ভাল-মন্দের প্রতি ঈমান

২৮. প্রশ্নঃ ইসলাম কাকে বলে❓
উত্তরঃ ইসলাম অর্থ, আত্মসমর্পন। পরিভাষায়ঃ তাওহীদ ও আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পন করা এবং শির্ক ও মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা।

২৯. প্রশ্নঃ ইসলামের স্তম্ভ কয়টি ও কি কি❓
উত্তরঃ ইসলামের স্তম্ভ ৫টি। সেগুলো হচ্ছেঃ (১) কালেমায়ে শাহাদাত উচ্চারণ করা, (২) নামায প্রতিষ্ঠা করা, (৩) যাকাত প্রদান করা (৪) রামাযান মাসে রোযা রাখা (৫) সামর্থ থাকলে আল্লাহর ঘরের হজ্জ আদায় করা।

৩০. প্রশ্নঃ আল্লাহর ফেরেশতাগণ কিসের তৈরী❓
উত্তরঃ তাঁরা নূরের তৈরী❓

৩১. প্রশ্নঃ ফেরেশতাদের সংখ্যা কত❓
উত্তরঃ তাঁদের সংখ্যা কত তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।

৩২. প্রশ্নঃ প্রধান চার ফেরেশতার নাম কি❓
উত্তরঃ জিবরাঈল, ইসরাফীল, মীকাঈল ও মালাকুল মওত (আঃ)।

৩৩. প্রশ্নঃ ওহী নাযিল করার দায়িত্ব কোন ফেরেশতার ছিল❓
উত্তরঃ জিবরাঈল (আঃ) এর।

৩৪. প্রশ্নঃ কোন ফেরেশতাকে সকল ফেরেশতার সরদার বলা হয়❓
উত্তরঃ জিবরাঈল (আঃ) কে।

৩৫. প্রশ্নঃ ইসরাফীল (আঃ) এর দায়িত্ব কি❓
উত্তরঃ আল্লাহর নির্দেশ ক্রমে শিংগায় ফুৎকার দেয়া।

৩৬. প্রশ্নঃ মীকাঈল ফেরেশতার কাজ কি❓
উত্তরঃ তিনি বৃষ্টি বর্ষণ, উদ্ভিদ উৎপাদন প্রভৃতি কাজে নিয়োজিত।

৩৭. প্রশ্নঃ প্রাণীকুলের জান কবজের কাজে নিয়োজিত ফেরেশতার নাম কি❓
উত্তরঃ মালাকুল মওত। (আজরাঈল নাম বিশুদ্ধ নয়)

৩৮. প্রশ্নঃ কোন ফেরেশতা কি মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণ করতে পারে❓
উত্তরঃ না, আল্লাহ্‌ ছাড়া কেউ কারো কোন কল্যাণ-অকল্যাণের মালিক নয়- ফেরেশতা, জিন, মানুষ- নবী, ওলী কেউ না।

৩৯. প্রশ্নঃ প্রসিদ্ধ আসমানী কিতাব কতখানা❓
উত্তরঃ ৪ খানা। ১. তাওরাত , ২. যাবূর , ৩. ইঞ্জিল , ৪. কুরআন ।

সংকলন:
মাও: আবু তাহের নেত্রকোণী
প্রতিষ্ঠাতা, দারুল উলুম ক্বাওমি মাদ্রাসা।
ভূগী, পূর্বধলা, নেত্রকোণা।
নিয়মিত লেখক, ইসলামিক জার্নাল বিভাগ
নেত্রকোণা জার্নাল