নেজা ডেস্ক রিপোর্টঃ
রাজধানীর বারিধারা ডিপ্লোম্যাটিক জোনে ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে সহকর্মীর গুলিতে নিহত পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল হকের (২৭) লাশ গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বিষ্ণুপুরে দাফন হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে বাড়ির পাশে ঈদগাঁ মাঠে জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ সময় জেলা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ (পিপিএম) উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এলাকার শতশত মানুষ তার জানায়ায় উপস্থিত ছিলেন। মনিরুলের মরদেহে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এরআগে রাতেই গ্রামের বাড়ি এসে পৌছে মনিরুলের লাশ। মনিরুলের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সেইসাথে মনিরুলের পরিবারের ঈদের আনন্দ শেষ হয়ে গেছে।
নিহত মনিরুল হকের চাচা আনিছুলল হক তাহের জানান, গত রমজান ঈদে ছুটি না পাওয়ায় বাড়িতে আসেনি মনিরুল। তাই এবার ১৫ দিনের ছুটিতে আজ সোমবার বাড়িতে আসার কথা ছিল তার। বাড়িতে এসে পরিবারের সবার সাথে কুরবানির ঈদে আনন্দ করার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার বাড়িতে এসেছে মনিরুলের লাশ।
এই কষ্ট সইবার মতো নয়। এ ঘটনায় মনিরুলকে গুলিবর্ষণকারী কাওছারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।পরিবারের লোকজনের পাশাপাশি এলাকাবাসীও মনিরুলের হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
মনিরুল বিষ্ণুপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত শামসুল হকের ছেলে। মনিরুলদের তিন ভাই তিন বোন। সবার ছোট মনিরুল।মনিরুলের ত্বাকী নামে দুই বছর বয়সী ছেলে সন্তান রয়েছে।
পরিবার ও স্বজনরা জানায়, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসবে বলে ছেলের জন্য বই-খেলনা সহ নানা রকমের জিনিসপত্র কিনেছিল মনিরুল। কিন্তু তার মৃত্যু সব আনন্দ শেষ করে দিয়েছে।
পরিবারের লোকজন জানায়, ২০১৪ সালে নেত্রকোনার আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে মনিরুল। পরে ময়মনসিংহে একটি বেসরকারি পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়ে ৪র্থ সেমিস্টার পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরমধ্যে ২০১৬ সালের শেষের দিকে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন মনিরুল।
তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট মনিরুল। চাকরিতে থাকা অবস্থায় তিন বছর আগে জেলার পূর্বধলা উপজেলায় বিয়ে করেন মনিরুল। তার স্ত্রীর নাম তানিয়া আক্তার তন্বী। ত্বাকী নামে তাদের দুই বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
তারা আরও জানায়, মনিরুলের বড় ভাই মাহবুব আলম টিটু পুলিশের একজন সদস্য। তিনি ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত। মনিরুলের বৃদ্ধা মা দেলোয়ারা হক ছেলের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মনিরুলের বড় ভাই আমিনুল হক মিঠু জানান, মনিরুল আমাদের সবার ছোট। সে আমাদের সবার আদরের। আজ সোমবার (১০ জুন) ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসার কথা ছিল। একসাথে সবাই মিলে ঈদ করার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার এসেছে মনিরুলের নিথর দেহ। ভাইকে তো আর ফিরে পাব না, তবে গুলিবর্ষণকারী কাওছারের দৃষ্টান্তমূলক সাজা চাই।
মনিরুলের স্কুল সহপাঠী ও প্রতিবেশী ইবাদ হোসেন জানান, মনিরুলদের ছয় ভাই-বোনের মধ্যে এক ভাই ছাড়া বাকি পাঁচজনই চাকরিজীবী। মনিরুল খুবই মিশুক ধরনের ছিল। পরিচিত ও বন্ধু-বান্ধবসহ সবার সাথে তার ভালো সম্পর্ক ছিল।
ইমেরিটাস এডিটরঃ দিলওয়ার খান
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মুহা. জহিরুল ইসলাম অসীম
বার্তা সম্পাদকঃ শরীফা অসীম বর্ষা
অস্থায়ী কার্যালয় : এআরএফবি ভবন, ময়মনসিংহ রোড, সাকুয়া বাজার, নেত্রকোণা সদর, ২৪০০
ফোনঃ ০১৭৩৫ ০৭ ৪৬ ০৪, বিজ্ঞাপন: ০১৬৪৫ ৮৮ ৪০ ৫০
ই-মেইলঃ netrokonajournal@gmail.com
©২০২০-২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত