স্বপ্নের বীজতলায় আমি যে স্বপ্ন রোপন করি, তা একদিন বিশাল মহীরূপে পরিণত হবে। কেননা আমি তাদের সমস্ত মায়ায়, মমতায় ও যত্নের কলা কৌশল প্রয়োগ করে বড় করার চেষ্টা করি। আমি জানি, আমার বিদ্যালয়ে আমার স্বপ্ন নামক এক একজন শিক্ষার্থী বাগানের কাদামাটির ন্যায়। তাই বিভিন্ন পরিবেশ থেকে আসা প্রতিজন শিক্ষার্থীকে এমন একটি আবহে নিয়ে আসি যা অত্যন্ত আনন্দদায়ক। এমনকি যা শিশু ভালোবাসে।
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার বাঁশির সুর শুনে হ্যামিলনের শিশুরা তার সাথে চলে গিয়েছিল একটি মোহে। আমি আমার বিদ্যালয়ে এমনই একটি মোহের জাল বুনেছি যা শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করে।
অনেকে মানসম্মত শিক্ষা নিয়ে নানান কথা বলেন, অনেক মান সম্মত শিক্ষার মানদন্ড নির্ধারণ করেন। আমি আমার ক্ষেত্র থেকে ভাবি ভিন্ন কিছু। এই লেখাতে হয়তো বা তার কিছুটা প্রকাশ পাবে।
প্রথমত বিদ্যালয় এলাকার বিদ্যালয় গমনোপযোগী সকল শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করা আমার প্রথম দায়িত্ব হিসেবে আমি মনে করি এবং সেই হিসেবে আমি ও আমার বিদ্যালয় কাজ করছি। শিশুরা ভালোবাসে শিশু উপযোগী শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বিরাজমান রাখার চেষ্টা আমি বরাবরই করে থাকি। এ ছাড়াও আমি মনে করি মানসম্মত শিক্ষা প্রদান ও অর্জন এবং টেকসইকরণে কিছু সাধারণ পূর্বশর্ত পূরণ প্রয়োজন। যেমন- বৈষম্যহীন সম্মন্বিত শিক্ষা, আধুনিক ও আন্তর্জাতিকমানের শিক্ষাক্রম প্রয়োজনীয় সুযোগ দিয়ে মেধাবীদের শিক্ষকতায় আনা ও স্থায়ীকরণ এবং শিক্ষায় অধিক বিনিয়োগ।
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র আর্থিক বিনিয়োগ তা কিন্তুু নয়। সকল শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে আনা এবং মানসম্মত শিক্ষা প্রদান আমার দায়িত্ব। বিদ্যালয়ে শিক্ষার নিরাপদ পরিবেশ তৈরি, প্রতিদিনের পাঠ নিশ্চিত করা, সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীতে অংশগ্রহণ করানো। এ সবই আমার নিত্যদিনের কাজ। এসব কাজ ফলপ্রসূভাবে করতে বিদ্যালয়ের সকল অংশীজন আমাকে সার্বিক সহযোগিতা করে আমার বিদ্যালয়কে একটি আদর্শ সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ার চেষ্টা করছি। আর বিনিয়োগ করছি আমার পরিশ্রম, চেষ্টা আর আন্তরিকতা।
এগুলো ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। আমার স্বপ্ন এখন আকাশ চুম্বী, আমার প্রতিষ্ঠানকে আমি সোনার মানুষ গড়ার এক অনন্য দৃষ্টান্ত রূপে দেখতে চাই।
লেখকঃ
মোঃ সেলিম রেজা
প্রধান শিক্ষক
নরুলিয়া লতিফ হায়দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
চল্লিশা, নেত্রকোণা সদর, নেত্রকোণা।