এম. এইচ সাইমন হাসান এর একগুচ্ছ কবিতা
১
জাতের বিধান
স্বরবৃত্ত- ৪+৪/৪+২
জাতের সম্মান রক্ষা করতে
করছি মারা-মারি ,
জাতের বিধান করছি বিচার
বসে ভাড়া-বাড়ি ।
একটু সম্মান করতে চাই না
দেখলে চামার মুচি ,
ব্রাহ্মণ,চন্ডাল,বাদশা,ফকির
এক জলেতে শুচি ।
সুন্নত দিলে হয় মুসলমান
নারীরা কি করে ?
পৈতা দেখে বামন চিনি
বামনি কি ধরে ?
তছবি হাতে মুসলিম বুঝি
হিন্দু তুলসীর মালা ,
আসা যাওয়ায় নেই তো চিহ্ন
সবার একই জ্বালা ।
আসার সময় কি জাত ছিলাম
যাবো কি জাত হয়ে ,
একবারও কি ভেবেছো মন
সময় যাচ্ছে বয়ে ।
হিন্দু,মুসলিম,বৌদ্ধ,খ্রিষ্টান
কি লাভ বিবাদ করে ,
চিরদিন তো বাঁচবো না কেউ
যাবো একদিন মরে ।
২
দ্বিতীয় কেউ নাই
হে দয়াময় দাওগো সারা
ভুবন পানে চাও ,
পতিত-পাবন করছে রোদন
প্রেমসুধা দাও ।
যে জন মরণ করে বরণ
অহর্নিশি হায় ,
আছে যার দুখ কাঁদে সেই লোক
লজ্জা নাহি পায় ।
হৃদয় কালো সে নেই ভালো
বেঁচে আছে পাও ,
নয়ন মুছাও আশ্রয় গুছাও
তারে তুলে নাও ।
প্রেমের তৃষ্ণা যার অন্তরে
তপোবনে যায়,
মন ভাঙিয়া যায় যে পথিক
তাহার পানে চায় ।
সঙ্গীহারা কাঁধে যারা
সঙ্গ দাও গো তার,
হেফাজতে রাখো তাহার
সর্ব দেহের নাড়।
শুন্যময় সব পূর্ণ করো
তুমি মহান সাঁই,
নিখিল ধরায় তুমি ছাড়া
দ্বিতীয় কেউ নাই ।
৩
নিষ্ঠুর প্রেম
বন্ধুরে তুই নিষ্ঠুর পাষাণ
কি কারণে হলে ?
তোর মনে কি এমন কষ্ট
যানা আমায় বলে ।
তুই ছিলে মোর মনের খাঁচায়
পোষা ময়না পাখি ,
কোন দোষে তুই এমন করে
দিলে আমায় ফাঁকি ?
ছলনার প্রেম করলি রে তুই
বুঝতে নাহি পারি ,
আমায় কেনো কষ্ট দিয়ে
করলি রে তুই আড়ি ?
চুপচাপ থেকে তোর পিরিতে
গেলাম আমি ফেঁসে ,
কি এমন সুখ পাইলি রে তুই
মিথ্যা ভালোবেসে ?
নিষ্ঠুর প্রেমের খেলা খেলে
থাকিস রে তুই সুখে ,
মন ভাঙ্গার এই যত কষ্ট
থাকুক আমার বুকে ।
নিষ্ঠুর প্রেমের ফাঁদে ফেলে
দিলে আমায় ধোকা ,
চালাক চতুর ছিলাম কিন্তু
প্রেম করে আজ বোকা ।
৪
বন্ধু থেকে ভাই
নেত্রকোনা জেলায় বাড়ি
সদর থানা কয়,
কয়রাটি তার গ্রামের বাড়ি
উজ্জ্বল মিয়া রয় ।
পাশের থানা কলমাকান্দায়
শুনুই গ্রামে ঘর,
অপু সেথায় বসত করে
বুকে কষ্টের ঝড় ।
অনলাইনেতে উজ্জ্বল অপুর
বন্ধুত্ব হয় খুব,
দুঃখ ভুলে সুখ সাগরে
একসাথে দেয় ডুব।
বন্ধুর মত বন্ধু হলে
ভাই থেকে কি কম,
উজ্জ্বল হলো অপুর নিঃশ্বাস
একসাথে নেয় দম ।
অপু বলে শোন উজ্জ্বল
তুমি আমার ভাই,
একই সাথে থাকবো দুজন
হারাতে না চাই ।
উজ্জ্বল বলে অপু ভাইয়া
তুমি আমার জান,
সম্পর্ক’টা রাখবো অটল
না যায় যেনো মান ।
দুই ভাই মিলে অতি সুখে
কাটায় তারা দিন,
মনের কষ্ট ভুলে গিয়ে
বাজায় সুখের বীণ ।
৫
প্রবাসীর জীবন
প্রবাস জীবন কাটছে কেমন
কেউ না জানতে চায় ,
মোদের কষ্ট বুঝতে চায় না
আপন বাবা-মায় ।
তারা ভাবে খাটছে ছেলে
যাচ্ছে ভালো দিন ,
সংসার চলছে অতিসুখে
নেইতো কোনো ঋণ ।
তাদের অনেক চাহিদা যে
পূরণ করতে হয় ,
খাচ্ছি বা কি? আছি কেমন
কখনো না কয় ।
গায়ের রক্ত পানি করে
প্রবাসে যে রই ,
পাইনা এমন আপন মানুষ
কষ্ট কারে কই !
মরুভূমির বালুর তাপে
ঘামে সারা গায় ,
কপালের ঘাম শরীর ঘেঁষে
পড়ে গিয়ে পায় ।
প্রবাসীরা দুখ বিলাসী
সুখ বিলাসী নয় ,
আপন জনের সুখের জন্য
শত ব্যথা সয় ।
প্রবাসে তো মা-বাবা নেই
নেইতো আপন ভাই ,
দুঃখে মাথায় হাত বুলাবে
এমন কেহ নাই ।