কথা সাহিত্যিক, মহেষখলা ক্যাম্প ট্রাইবুনালের বিচারপতি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকদাদ চৌধুরী [৩য় (শেষ) পর্ব]
খালেকদাদ চৌধুরীকে দেখার পর থেকেই এবং তাদের ন্যায় বিচারের ধারা দেখে আশা হয়েছে যে তারাও তাদের ব্যাপারে সুবিচার পাবে। বর্তমানে তারা মেহের আলী হত্যার বিচার ও তাদের জিনিসপত্র ফেরত নিতে চান। তা পেলেই তারা কৃতার্থ হবেন
নেজা ডেস্ক :
মহেষখলা ক্যাম্পে ট্রাইব্যুনালের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অধিবেশন:
খালেকদাদ চৌধুরী জানতে চান এখন তারা কি চায় ? তারা বলে যে, খালেকদাদ চৌধুরীকে দেখার পর থেকেই এবং তাদের ন্যায় বিচারের ধারা দেখে আশা হয়েছে যে তারাও তাদের ব্যাপারে সুবিচার পাবে। বর্তমানে তারা মেহের আলী হত্যার বিচার ও তাদের জিনিসপত্র ফেরত নিতে চান। তা পেলেই তারা কৃতার্থ হবেন। খালেকদাদ চৌধুরী ওদের কাছে শেষটায় মেহের আলী সম্বন্ধে জানতে চান।
মেহের আলী আওয়ামীলীগের লোক। একজন অত্যন্ত সৎ এবং নির্ভীক কর্মী। মেহের আলী ছিল নেত্রকোনা মুক্তিসংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সদস্য,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রনেতা, নেত্রকোণা মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি (জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন পূর্বপাকিস্তান আওয়ামীলীগের ছাত্র সংগঠন), জেলা শ্রমিকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, নেত্রকোণা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম স্থপতি, মধুমাছি কচিকাঁচার মেলার প্রধান উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক এবং জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম ও কৃষিবিষয়ক সম্পাদক’৭১পর্যন্ত।(ষাটের দশকে ছাত্রদের পর শ্রমিক ও কৃষক গোষ্ঠী সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল। এই দুটি গোষ্ঠী নেত্রকোণায় স্বাধিকার আন্দোলন,সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।)
বঙ্গবন্ধুর ডাকে তিনি তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করতে ভারতের মহেশখলা যাওয়ার পথে মধ্যনগর থানার দুগনৈ গ্রামে তাঁর শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন মধ্যনগর সহ আশপাশএলাকার ছাত্র যুবকদেরকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগঠিত করবার জন্য। ভারতের মহেষখলা ইউথ ক্যাম্প, মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প এবং শরণার্থী শিবিরে তাঁর ভূমিকা ছিলো অপরিসীম। তিনি মহেষখলা ইউথ ক্যাম্প পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। মহেষখলা ক্যাম্পে মূলত নেত্রকোণা ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং সহ অন্যান্য রিফিউজি ক্যাম্প পরিচালনা করা হতো। মহেষখলাতে মুক্তিযোদ্ধা ও ইয়ুথ ক্যাম্প পরিচালনার পাশাপাশি তিনি মধ্যনগর থানার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামের ছাত্র, যুব ও সাধারণ মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের জন্যে সংগঠিত করেন এবং ধান, চাল সহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী ক্যাম্পে সরবরাহের ব্যবস্থা করেন যা কিনা যুদ্ধের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় রসদ।জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজন মেহের আলী বঙ্গবন্ধুর সাথে একই মঞ্চে বহুবার বক্তব্য প্রদান করেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মেহের আলী নেত্রকোণার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের মধ্যে একমাত্র শহীদ এবং শহীদ বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে অন্যতম (সরকার নির্ধারিত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংজ্ঞা অনুযায়ী) যিনি বীর মুক্তিমুযোদ্ধা হিসেবে ১৯৭১ সালের ১৭ই মে মহেষখলা ক্যাম্পে দায়িত্ব পালন কালে আততায়ীর গুলিতে শহীদ হন । মেহের আলী নিহত হওয়ার পরপরই মহেষখলাতে জয় বাংলা বাহিনীর নেত্রকোনা শাখার প্রধান,কোম্পানী কমান্ডার,জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি,সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ-৭১, নেত্রকোণা জেলা- সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মো: শামছুজ্জোহাকে গ্রেফতার করে হত্যা করার জন্য। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে তারা বেঁচে যায়।
উল্লেখ্য যে,মুক্তিযুদ্ধের খরচ ও যুদ্ধ পরিচালনার জন্যে জাতীয় প্রয়োজনে বীরমুক্তিযোদ্ধা মো: শামসুজ্জোহার নেতৃত্বে বীরমুক্তিযোদ্ধা বুলবুল ইপিআর সদস্যসহ অন্যান্যদরকে নিয়ে পুলিশের অস্ত্রাগার ও নেত্রকোণার ন্যাশনাল ব্যাংকের Volt ভেঙ্গে টাকা পয়সা , সোনা লুট করেন যে ঘটনাটি জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা আছে। এই ঘটনার সাথে শহীদ মেহের আলীর বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা ছিলনা । অথচ নিরপরাদ মানুষটিকে হত্যা করা হলো। কিন্তু নেত্রকোণাবাসী শহীদ মেহের আলী-র হত্যাকারীদের ক্ষমা করেননি। স্বাধীনতা লাভের অল্প কয়েকদিন পর তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম এরশাদুর রহমানের নেতৃত্বে সেইসব ঘাতকদের জনসম্মুখে হত্যা করা হয়েছিলো।
খালেকদাদ চৌধুরী মেহের আলী সম্বন্ধে ইতিমধ্যেই নানা গুঞ্জন কথা শুনতে পেয়েছেন। তাই তার ব্যাপারে ওদের কাছে জানতে চাইলে ওরা শুধু বলে যে, শহীদ মেহের আলীকে হত্যার পর ষড়যন্ত্রকারীরা তার সম্পর্কে মিথ্যে অপবাদ ছড়িয়েছে। হ্যা তিনি দুগনৈ গ্রামে এসেছিলেন এবং এলাকার মানুষদেরকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগঠিত করেন ও শহীদ মেহের আলী উনার শ্বশুর রহমত আলী তালুকদারের বাড়ী থেকে শত শত মণ ধান, চাল, অন্যান্য সামগ্রী মহেষখলা ক্যাম্পে পাঠান যাহা ক্যাম্প পরিচালণায় অত্যন্ত গুরুত্বর্প্ণূ ভুমিকা পালন করে। পরবর্তীতে তিনি মহেষখলা ক্যাম্পে চলে যান তার উপর অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব পালনের জন্য।
পরের দিন তাদের কেসের তারিখ জানিয়ে দেবেন বলে বিদায় করেন। সেদিন সেখান থেকে পরদিন ৯টা দশটার দিকে বিচারের তারিখ জেনে যেতে বলেন। তারা বলে যে, না তাদের থাকা সম্ভব নয়। কাল সকালে তারা আবার আসবে। তাদের বাড়ী দুগনই গ্রামে। এখান থেকে নৌকা পথে দু’ঘন্টার রাস্তা। সন্ধ্যার আগেই তারা বাড়ী ফিরে যাবে। চার দাঁড়ের নৌকা দ্রুত বেয়ে তারা এখানে আসা যাওয়া করে। ওরা চলে যাওয়ার পরই জনাব চৌধুরী ডাঃ সাহেবকে ডাকেন। তিনি ঘুমিয়েছিলেন। তাকে ওদের কথা সব বলেন । তিনি বলেন, সত্য কথাই ওরা বলেছে । এ ব্যাপারে তার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করেন কালই ওদের কেসের তারিখ দেবেন। হেকিম সাহেবকেও রাজী করাবেন।
এরপর তারা তাদের দৈনন্দিন কাজে সন্ধ্যার পরই অফিসে হাজির হন। অফিসের কাজ সেরে রাত দশটা পর্যন্ত চৌধুরী সাহেবের সঙ্গে ওদের কেসের তারিখ নির্ধারণের ব্যাপারে আলোচনা করেন। প্রথমদিকে তিনি নানা অসুবিধার কথা বলে তারিখ আরো পরে নির্ধারণের কথা জোর দিয়ে বলতে থাকেন। তাতে তারাও তাদের মতে দৃঢ় থাকেন এবং শেষটায় তাকে বুঝাতে সমর্থ হন যে ব্যাপারটা যতই দেরী হবে ততই তাদের ন্যায় নীতি এবং সততার প্রতি তাদের কর্মী ও সদস্যসহ বহু লোকের মন সন্ধিগ্ধ হবে। সাতদিনের মধ্যে কেসের তারিখ নির্ধারণ করেন।
পরদিন সকাল আটটায় অফিসে খালেকদাদ চৌধুরী যান। দশটায় ট্রাইব্যুনালে বসেন। ইতিমধ্যে ওরাও এসে গেছে। তিনি তাদের ডেকে বিচারের তারিখ জানিয়ে দেন এবং সেই দিন ঠিক দশটায় হাজির হতে নির্দেশ দেন এবং তাদের জিনিসপত্রের লিস্ট দিতে বলেন। তারা জানায়, একপ্রস্থ লিস্ট ক্যাম্প অফিসেও আছে। সেটা দেখেই সে অনুযায়ী রায় দিন। আমরা আপনাদের সে রায়ই মেনে নেব। ওরা বিদায় হলে হেকিম চৌধুরী সাহেবকে সে তালিকায় উল্লেখিত সমস্ত জিনিস ঐদিন অফিসে এনে জমা রাখতে বলেন। তিনি জানান যে, জিনিসগুলো সেকান্দর নুরীর বাসগৃহে রয়েছে। লিস্টও তার কাছে তবে এক কপি তার নিজের কাছেও আছে। নির্ধারিত তারিখের দু’দিন আগেই লিষ্ট অনুযায়ী সমস্ত জিনিসপত্র আমাদের কার্যালয়ের সামনের খোলা জায়গায় জমা করা হয়।
এ ব্যাপারে পুরো দু’দিন লেগে যায়। জিনিসপত্রের সংখ্যা দেখে সবাই তাজ্জব বনে যায়। এত জিনিসপত্র যে গ্রামাঞ্চলের কোন অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থের বাড়ীতে থাকতে পারে তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। বড় থেকে সাইজ করে সাজানো ২৮টি তামার ও এলুমিনিয়াসের ডেকচি, ৯টি বড় বড় ষ্টীল ট্রাঙ্ক ভর্তি কাপড় চোপড় ( বেশীরভাগ শাড়ী, ব্লাউজ, ওড়না)। যার অধিকাংশই সিল্ক। নাইলন ও টিসুর সূতী বস্ত্রাদিও প্রচুর। তাছাড়া কাসা, চীনা মাটির থালা-বাটি ও অন্যান্যবাসনের সেট, বেশ কয়েকটি দামী ঘড়ি ও ঝর্না কলম, আরো অনেক কিছু । যা শহরের বিত্তবান পরিবারেও বিরল।
নির্ধারিত দিনে ওরা এলো। দুটো থেকে তাদের মালামাল তালিকা মিলিয়ে তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে শুরু করেন। ৪টার দিকে খালেকদাদ চৌধুরী স্নান খাওয়া সারতে চলে যান। পরে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত একটা পর্যন্ত সব কিছু ফেরৎ দেওয়ার কাজ শেষ হলে তারা রশিদ দিয়ে তা নিয়ে যায়। কাজ শেষে তারা তাদের সব জিনিস পেয়েছে কি না জানতে চাইলে কিছুক্ষণ নীরব থেকে মাতব্বর লোকটি তথা মতিয়ুর রহমান চৌধুরী বলে যে, যা পেয়েছে তাতেই তারা খুশী। আরো বলে যে, আপনারা আসাতে এবং একাজে তদারক করাতেই তারা তা পেয়েছে নচেৎ তারা এসবের আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলো।
তবে একটা জিনিস শুধু পেল না। সেটা পেলেই তারা সবচেয়ে বেশী খুশী হতো। সেটা কি জানতে চাইলে খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বলে যে মেয়েদের একটি হাত ঘড়ি। ঘড়িটি মেহের আলীর স্ত্রীর।মেহের আলী তার স্ত্রীকে বিয়েতে উপহার দিয়েছিল। আমি বলি যে যা লিষ্টে পেয়েছি তার সবই দিয়েছি। কিন্তু এ রকম ঘড়িতো লিষ্টে নেই। যাক তবে ঘড়িটি আছে। তারা জানে বোঝা গেল বলতে সাহস পাচ্ছে না। পরিষেশে মতিয়ুর রহমান চৌধুরী, মেহের আলীর হত্যার বিচার ও তার পরিবারের জন্য কিছু করার অনুরোধ করেন। এরপর তারা আর কিছু না বলে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জিনিসপত্র তাদের নৌকায় তুলতে শুরু করে। ট্রাইবুনালের সদস্যরাও উঠে পড়েন।
জনাব খালেকদাদ চৌধুরী তার অমরগ্রন্থ “শতাব্দীর দুই দিগন্ত “ বইটিতে জনাব মেহের আলী সম্পর্কে লিখেছেন:
”মেহের আলী আমাদের লোক। তিনি আওয়ামীলীগের একজন অত্যন্ত সৎ ও নির্ভীক কর্মী। মৃত্যুকালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও নেত্রকোনা মু্ক্তিসংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সদস্য,জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম ও কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। যদি আগামীতে সময় ও সুযোগ পাই তবে তাকে অবলম্বন করে একটা উপন্যাস লেখার ইচছা রইল।“
জুলাই থেকে ট্রেনিং প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানী ব্যাপকভাবে আসতে শুরু করে। পূর্বেও এসেছে। তবে এত ব্যাপকভাবে নয়। ওরা সাধারণত দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, নাজিরপুর এবং বিভিন্ন স্থানে পাক বাহিনীর ঘাঁটি তাদের চলাচলের উপর আক্রমণে ছিলো সীমাবদ্ধ। এ সময় নৌকা চলার পথ সুগম হওয়ায় এবং পানিতে ভরে যাওয়ায় মুক্তিবাহিনীর কোম্পানীগুলোকে সুনামগঞ্জ মহকুমা এবং ময়মনসিংহ জেলার নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জ মহকুমার বিভিন্ন স্থানে ও ময়মনসিংহ সদরের কোন কোন স্থানে আক্রমণ পরিচালনার জন্য প্রেরিত হতে থাকে।
কোম্পানীগুলি মহিষখলা এসে পৌঁছার পরই ক্যাম্প কমিটি সেখানে নৌকা যোগাড় করে তাদের দেশের অভ্যন্তরে পাঠানোর ত্বরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে এই বিরাট হাওর এলাকার সবটাই মুক্ত এলাকা ছিল এবং তখন থেকে মুক্তিবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে। এসব কোম্পানীগুলি নির্দিষ্ট এলাকায় তাদের তৎপরতা চালায়। কলমাকান্দা, বারহাট্টা, ধরমপাশা, মোহনগঞ্জ, আটপাড়া, মদন, খালিয়াজুরী, ইটনা, তাড়াইল, নিখলী, করিমগঞ্জ, অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর, নান্দাইল, কেন্দুয়া, দিরাই প্রভৃতি থানার পাক সেনাদের ঘাটিগুলি ছিল এদের লক্ষ্যস্থল। সুযোগ মতো এসব ঘাটিতে আকস্মিকভাবে আক্রমণ চালিয়ে শত্রুদের থানা প্রাঙ্গণেই আটকে রাখে। থানার বাইরে বেরুবার দু:সাহস ওদের হতো না। কোনদিন বের হলেই অতর্কিত আক্রমণের শিকার হতে হতো। কোন কোন স্থানে খন্ড যুদ্ধও হয়েছে। সবখানেই মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে মার খেয়েছে ভীষণভাবে।
জনাব খালেকদাদ চৌধুরী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সর্ব জনাব ডাঃ আখলাক হোসেন এম.পি, কে.এম ফজলুল কাদের এডভোকেট, মারাজ মিয়া চেয়ারম্যান, আব্দুল কদ্দুছ আজাদ, নুরুজ্জামান চিশতী,ইনসান উদ্দিন খান ও ডাঃ জগদীশ দত্তদের নিয়ে মহিষখলা ক্যাম্পের যাবতীয় কর্মকান্ড অত্যন্ত সফলভাবে পরিচালনা করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা মেহের আলীকে হত্যা এবং বীরমুক্তিযোদ্ধা মো: শামছুজ্জোহাকে হত্যা করার জন্য গ্রেফতারের পর উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিনি নেতৃস্থানীয় ভুমিকা পালন করেন। বাংলা একাডেমী ও একুশে পদক প্রাপ্ত সাহিত্যিক খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্যের পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরত্বপূর্ণ অবদানের জন্যে জাতির ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন। (শেষ)
[লেখাটি নেত্রকোণার গর্ব জাতীয় সাহিত্যিক বাংলা একাডেমী ও একুশে পদক প্রাপ্ত লেখক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক,মহেষখলা ক্যাম্প পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য জনাব খালেকদাদ চৌধুরীর অমরগ্রন্থ “শতাব্দীর দুই দিগন্ত“, প্রখ্যাত সাহিত্যিক ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক,প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ননী গোপল সরকারের প্রবন্ধ অগ্নিযুগের সূর্যসৈনিক : বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মেহের আলী, মুক্তিযুদ্ধের একনিষ্ঠ সংগঠক : ডা: আখলাকুল হোসাইন আহমেদ, স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানী শহীদ মেহের আলী , প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিস্ট সাবসেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিমুযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরীর মুক্তিযুদ্ধে নেত্রকোনা, মুক্তিযুদ্ধে মুজিববাহিনী, হায়দার জাহান চৌধুরীর প্রবন্ধ “শহীদ মেহের আলী একটি নাম, একটি ইতিহাস “, “ষাটের দশকে ছাত্র রাজনীতি ও ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ ,নেত্রকোণায় বঙ্গবন্ধু, নেত্রকোণার রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ মরহুম জননেতা আব্দুল খালেক এমপি, মহেষখলা ক্যাম্প, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক খালেকদাদ চৌধুরী ও মেহের আলী প্রসঙ্গ,প্রখ্যাত সাহিত্যিক ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক,প্রাবন্ধিক সাবসেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিমুযোদ্ধা গোলাম এরশাদুর রহমানের মুক্তিসংগ্রামে নেত্রকোণা, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতি জনাব ওবায়দুল হাসানের গ্রন্থ “ মুক্তিযুদ্ধে মোহনগন্জ-মহেষখলা ক্যাম্প ও ডাঃ আকলাখ হোসেন আহমদ “, ভাষা সংগ্রামের জন্যে রাষ্ট্রিকিট হওয়া মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ভাষা সৈনিক আজিম উদ্দীন আহমেদ সাহেবের প্রবন্ধ “,অসমাপ্ত গল্প, প্রখ্যাত সাংবাদিক কুন্তল বিশ্বাসের প্রবন্ধ “ নেত্রকোণায় ভাষা আন্দোলন”-ভাষা সংগ্রামে নেত্রকোণা ২০০৮ স্মারকগ্রন্থ, ভাষা সৈনিক আজিম উদ্দীন আহমেদ সাহেবের প্রবন্ধ “একাত্তরের রক্তঝরা দিনগুলো”-আমাদের ময়মনসিংহ, জাতীয় সাহিত্যিক একুশে পদক প্রাপ্ত প্রখ্যাত সাংবাদিক ও লেখক সানাউল্লাহ নূরী সাহেবের বিবৃতি “ নেত্রকোণায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মেহের আলীর স্মরণসভায় সানাউল্লাহ নূরী- ২৬-০৬-১৯৯৪ দিনকাল, বিভিন্ন জাতীয় ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎাকার, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার, স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎাকার, বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা,টিভি সংবাদ, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ভিডিও,অডিও ও মেহের আলীর ডায়েরী অবলম্বনে লেখা হয়েছে।]
বীরমুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী:
(নেত্রকোনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি, সাবসেক্টর কমান্ডার,মুজিব বাহিনী বা বাংলাদেশ মুক্তিফৌজ বা বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স সংক্ষেপে (বি এল এফ), নেত্রকোনা প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ-৭১, নেত্রকোণা জেলা-এর সহ সভাপতি, সাংবাদিক ও কলামিস্ট)
এই লেখকের লেখা আরও পড়ুন……
ষাটের দশকে ছাত্র রাজনীতি ও ৭১’- র মুক্তিযুদ্ধ : বীরমুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী
শহীদ মেহের আলী একটি নাম, একটি ইতিহাস : বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী
নেত্রকোণায় বঙ্গবন্ধু: বীরমুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী
মুক্তিযুদ্ধের স্মারক : বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী
নেত্রকোণার রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ মরহুম জননেতা আব্দুল খালেক এমপি
জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে শিশু সংগঠন কচি-কাঁচার মেলা : বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী
নেত্রকোণা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ইতিহাস : বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী
কথা সাহিত্যিক, মহেষখলা ক্যাম্প ট্রাইব্যুনাল তথা আদালতের বিচারপতি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকদাদ চৌধুরী (পর্ব -১)
কথা সাহিত্যিক, মহেষখলা ক্যাম্প ট্রাইবুনালের বিচারপতি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকদাদ চৌধুরী (পর্ব -২)
More read…
নেত্রকোনার শহীদ বুদ্ধিজীবিবৃন্দ : ইন্জীনিয়ার জামান
মুক্তিযোদ্ধার আত্মকথা : বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শামছুজ্জোহা- প্রিয়ঙ্কর বিশ্বাস তন্ময়
আরও পড়ুন…..
মুক্তিযুদ্ধের একনিষ্ঠ সংগঠক: ডা: আখলাকুল হোসাইন আহমেদ- অধ্যাপক ননী গোপাল সরকার
স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানী শহীদ মেহের আলী (পর্ব-১)
স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানী শহীদ মেহের আলী (পর্ব-২)
স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানী শহীদ মেহের আলী (পর্ব-৩)
স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানী শহীদ মেহের আলী (পর্ব-৪)
স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানী শহীদ মেহের আলী [৫ম (শেষ) পর্ব]