কলমাকান্দায় ইউপি চেয়ারম্যানের ১৫ মাসের সাজা
কলমাকান্দা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোণার কলমাকান্দার রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আনিছুর রহমান পাঠানসহ পাঁচজনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জমি দখলসহ মারামারির ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোণা জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক রিমি সাহা এই আদেশ দেন বলে জানিয়েছন বাদী পক্ষের আইনজীবী পিযুষ কুমার সাহা। পিযুষ কুমার সাহা জানান, জমি দখলকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান পাঠানকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। এ ছাড়া মামলার অপর আসামিদের মধ্যে তাঁর ছেলে হৃদয় পাঠানকে (২৮) দেড় বছর, ভাতিজা সাইদুল পাঠানকে (৩২) দেড় বছর, জিল্লুর পাঠানকে (৩৪) ১৫ মাস ও চাচাতো ভাই মাসুম পাঠানকে (৪০) তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় চেয়ারম্যানসহ চারজন আসামি উপস্থিত ছিলেন। আসামি মাসুম পাঠান (৪৫) পলাতক রয়েছেন। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ৫১৬ ও ৫১৭ দাগের ৪৬ শতক জায়গা নিয়ে আনিসুর রহমান পাঠানের সঙ্গে রংছাতি গ্রামের বাসিন্দা খুশিকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুস আলীর মধ্যে বিরোধ ছিল। চেয়ারম্যানের দাবি, ওই জায়গাটি পরিষদের। আর ইউনুস আলীর দাবি, জায়গাটি তিনি ক্রয়সূত্রে মালিক। জায়গা নিয়ে পরিষদ ও ইউনুস আলীর মধ্যে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তবে ইউনুস আলীর দখলে থাকায় আদালত স্থিতাবস্থা জারি করেন। ইউনুস আলীর ওই জায়গায় দুটি ঘর তৈরি করে বসবাস করছিলেন। গত ২০২২ সালের ৫ অক্টোবর আনিসুর রহমান পাঠান লোকজন নিয়ে ইউনুস আলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘর ভাঙচুর, লুটপাটসহ মারধর করেন। এতে ইউনুস আলী, তাঁর চাচাতো ভাই মামুনুর রশিদ ও আতাউর রহমান আহত হন। ঘটনার ওই দিন ইউনুস আলীর স্ত্রী আসমা আক্তার বাদী হয়ে আনিছুর রহমানসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এক আসামি গত ফেব্রুয়ারিতে মারা যান। আজ মঙ্গলবার আদালত চেয়ারম্যানসহ পাঁচ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন। ইউনুস আলী বলেন, জায়গাটি দীর্ঘদিন আগে সাফ কাওলা দলিল মুলে আমি একজনের কাছ থেকে ক্রয় করি। আমার ভোগদখলে থাকা জায়গা দখল করতে চেয়ারম্যান তাঁর লোকজন নিয়ে হামলা, লুটপাট, ঘরভাঙচুরসহ আমাদের জখম করেন। এ ঘটনায় মামলা হলে আদালত আজ দুপুরে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আমরা সুবিচার পেয়েছি। আনিছুর রহমানের আইনজীবী নুরুল ইসলাম বলেন, এ রায় আমার মক্কেল সুবিচার পাননি। আমরা আপিল করবো। নেত্রকোণা কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক জাফর ইকবাল বলেন, আদালতের নির্দেশে চেয়ারম্যানসহ চার আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।