কালীপুরের ইতিহাস (পর্ব-২) : গৌরীপুরে কালীপুর বড়তরফ জমিদারবাড়ির ইতিকথা
শ্রীকান্তের কালীপুর বড় তরফ জমিদারবাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর পৌরশহরে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদারবাড়ি। ইংরেজি ১৭৭০ অথবা ১৭৭৭ সালের মধ্যে এই কালীপুর জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তন হয়। কালীপুর জমিদারবাড়ির মূল প্রতিষ্ঠাতারা ছিলেন মোমেনসিং, জাফরশাহী পরগনাসহ মোট চারটি পরগনার জমিদার শ্রীকৃষ্ণ চৌধুরীর দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তান গঙ্গানারায়ণ চৌধুরী ও তার দত্তক ছেলে হরনাথ চৌধুরী। বাংলা ১১৭৬ ও ইংরেজি ১৭৭০ সালে গৌরীপুর রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা জমিদার যুগলকিশোর রায় চৌধুরী মোমেনসিং পরগনার এজমালি সম্পত্তি থেকে গৌরীপুর শহর বা বন্দর পত্তন করেন। তখন একটি গাঙের উত্তরপাশে ছিল গৌরীপুর এবং দক্ষিণ পাশে ছিল কালীপুর। ইতিহাসের থেকে পেছনে ফিরলে দেখা যায়, জামালপুরের মহিরামকুল রাজবাড়িতে গঙ্গানারায়ণ চৌধুরী ১৭৭৭ সালে মৃত্যু হলে তার দত্তক ছেলে হরনাথ চৌধুরী চার আনা (৮০ গন্ডা) সম্পত্তির অধিকারী হয়ে কালীপুরে চলে আসেন। কেউ কেউ বলেন, গঙ্গানারায়ণ চৌধুরীই কালীপুরে প্রথম আসেন এবং একটি কাছারি প্রতিষ্ঠা করে আবার মহিরামকুলে চলে যান। ধারণা করা হয়, ১৭৭০ সালের মহামারি অর্থাৎ বাংলা ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে জমিদার যুগলকিশোর রায়চৌধুরীর নৌবহরে পরিবারসহ গঙ্গানারায়ণ চৌধুরী এখানে চলে এসেছিলেন।
১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে কালীপুর জমিদারি তিনটি তরফে বিভক্ত এবং তিনটি তরফের প্রতিষ্ঠাতা হরনাথের তিন ভাগ্নেঃ
হরনাথ চৌধুরীর ভাগ্নে উমাকান্ত লাহিড়ি (গং) বাদী হয়ে বাংলা ১২৩৬ (ইংরেজি ১৮২৯) সালে আদালতের রায়ে সম্পত্তির অধিকার লাভ করে ‘লাহিড়ি’ উপাধির নামের শেষে কালীপুর জমিদারির ‘চৌধুরী’ উপাধি নিয়ে কালীপুরে মামারবাড়িতে উপস্থিত হন। গঙ্গানারায়ণ চৌধুরীর একমাত্র মেয়ে গৌরীদেবী জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার মহিরামকুল গ্রামে অর্থাৎ বাবার বাড়ির কাছে বসবাস করতেন।গৌরীদেবীর চার ছেলে – উমাকান্ত, শ্রীকান্ত, কমলাকান্ত ও রামকান্ত। রামকান্ত উন্মাদ ছিলেন বলে সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হন। বাকী তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় শ্রীকান্ত দুই ছেলে রেখে সম্পত্তি পাওয়ার আগেই মহিরামকুলে পরলোকগমন করেন। কাজেই শ্রীকান্তের অংশ তার দুই ছেলে উত্তরাধিকারী হন। তাদের তিন বোন অর্থাৎ গৌরীদেবীর তিন মেয়ে ছিল। তাদের মধ্যে শিবানীদেবী ও লক্ষ্মীদেবীর নাম জানা গেছে, অন্যজনের নাম জানা সম্ভব হয়নি। শ্রীকান্ত, কমলাকান্ত ও উমাকান্ত মহিরামকুলে আগে থেকেই পৃথক ছিলেন। সুতরাং ময়মনসিংহ ও জফরশাহী পরগণার চার আনা বা ৮০ গন্ডা অংশ তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রত্যেক অংশ ২৬.৬৭ গন্ডা, অর্থাৎ ২৬ গন্ডা, ২ কড়া, ২ ক্রান্তি করে পান।
কালীপুরে তাদের পৃথক পৃথক বাসভবন নির্মিত হয়েছিল। শ্রীকান্তের দুই ছেলে গঙ্গাদেবীর বাড়িতে বাসস্থান নির্মাণ করলেন। শ্রীকান্ত বড় ছিলেন বলে গঙ্গাদেবীর বাড়ির নতুন নাম কালীপুর বড় তরফ জমিদার বাড়ি হয়। ভাইদের মধ্যে কমলাকান্ত মধ্যম ও উমাকান্ত কনিষ্ঠ ছিলেন বলে, তাদের বাসসথান যথাক্রমে মধ্যম তরফ ও ছোট তরফ নামে পরিচিতি পায়।
মহিরামকুলে শ্রীকান্ত লাহিড়ি ভারতের নদীয়া জেলার বাহাদুরপুর গ্রামের গোঁসাই বংশের করুণাময়ী দেবীকে বিয়ে করেন। করুণাময়ীর গর্ভে তার নীলকান্ত লাহিড়ি ও রত্নকান্ত লাহিড়ি নামে দুই ছেলের জন্ম হয়। নীলকান্ত পাবনা জেলার মথুরা গ্রামের রমানাথ ভট্টাচার্যের মেয়ে হরসুন্দরী দেবীকে বিয়ে করেন। রত্নকান্ত লাহিড়ি রাজশাহী জেলার হরিশপুর গ্রামের রামমণি দেবীকে বিয়ে করেন। বাবার মৃত্যুর পরেও দুই ভাই এক সঙ্গে বসবাস করছিলেন।
কালীপুর বড় তরফের জমিদার নীলকান্ত লাহিড়ি তার স্ত্রী হরসুন্দরী দেবী, তার একমাত্র ছেলে ভবানীকান্ত লাহিড়িকে রেখে ইংরেজি ১৮৩৮ ও বাংলা ১২৪২ সালের ১ শ্রাবণ পরলোকগমন করেন। বাবার মৃত্যুর অল্পকাল পরেই ভবানীকান্ত লাহিড়ি অকাল মৃত্যু হয়। স্বামীর শোকে বিধবা স্ত্রী হরসুন্দরী দেবী এবং ছেলের শোকে মায়ের থেমে থেমে আহাজারি জমিদারবাড়ির পরিবেশ ভারী করে তুলেছিল। পরবর্তীতে নীলকান্ত লাহিড়ির ছোটভাই রত্নকান্ত লাহিড়ি তার স্ত্রী রামমণি দেবী, দুই ছেলে তারাকান্ত ও সূর্যকান্ত লাহিড়িকে রেখে পরলোকগমন করেন। রত্নকান্ত লাহিড়ির মৃত্যুর পর হরসুন্দরী দেবী ও রামমণি দেবী পৃথক হয়ে বড় তরফ জমিদারির দুই অংশ বিভক্ত হয়ে প্রত্যেকে ১৩ গন্ডা ১ কড়া ১ ক্রান্তি করে পান।
রামমণি দেবীর স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন হতে থাকে। নীলকান্ত লাহিড়ির বিধবা স্ত্রী কালীপুর জমিদারির ১৩ গন্ডা ১ কড়া ১ ক্রান্তি পান। রামমণি দেবীর মৃত্যুর পর তার দুই ছেলে তারাকান্ত ও সূর্যকান্ত বাবার সম্পত্তির অধিকারী হন। উভয় ভাই একান্নভুক্তই ছিলেন। এই বংশের জমিদাদের ১৩ গন্ডা ১ কড়া ১ ক্রান্তি দুই ভাগে ভাগাভাগি করে সর্বশেষে ৬ গন্ডা করে দুইটি হিস্যা সৃষ্টি হয় – উত্তরের ছয়গণ্ডা ও দক্ষিণের ছয়গণ্ডা।।
রামমণি দেবীর বড় ছেলে তারাকান্তের বংশ
তারাকান্ত রাজশাহী জেলার অন্তর্গত আমহাটি গ্রামের রামসুন্দরী দেবীকে বিয়ে করেন। কিন্তু তাদের বিয়ের অল্পদিন পরেই তারাকান্ত লাহিড়ির ২০ বছর বয়সে মৃত্যু হয়।। রামগোপালপুরের জমিদার শ্রী শৌরীন্দ্র্রকিশোর রায় চৌধুরীর ১৯১১ সালে প্রকাশিত ‘ময়মনসিংহের বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ জমিদার’ গ্রন্থে তার উদ্ধৃতি থেকে জানা যায় যে, “তারাকান্ত নিঃসন্তান অবস্থায় পরলোক গমন করিলে রামসুন্দরী দেবী কয়েক বৎসর পর পৃথক হয়ে যামিনীকান্তকে দত্তক পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। যামিনীকান্ত বিলাসপ্রিয় হইলেও চতুর ও সদালাপি। তিনি বরদাসুন্দরী দেবীর পাণিগ্রহণ করেন। তিনি ঋণগ্রস্থ হওয়ায় তাহার ময়মনসিংহ পরগণার অংশ ধরণীকান্ত লাহিড়ি চৌধুরির নিকট পত্তনী দিয়াছেন। রামসুন্দরী দেবী কালীপুরের উত্তরাংশে বাসস্থাপন করিয়াছিলেন বলিয়া তাহা ‘উত্তরের ছয়গণ্ডা’ নামে অভিহিত হইয়াছে।” ১৯১১ সাল হতে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত যামিনীকান্ত লাহিড়ির জমিদারির ইতিহাস সঠিকভাবে জানা যায়নি। তার স্ত্রী বরদাসুন্দরী দেবীর গর্ভে কতজন সন্তান ছিল তা জানা যায়নি। দেশভাগের সময় জমিদারদের বংশধররা বাড়িটি ফেলে ভারতে চলে যান। শত্রু সম্পত্তি হিসেবে জমিদারদের অনেক জমি সরকারের অধিকারে আসে বলে জানা যায়।ইংরেজি ১৯৬১ সালে উত্তরের ছয়গণ্ডার বাসস্থানে প্রধান উদ্যোক্তা ও শিক্ষানুরাগী আব্দুল হামিদ (এমপি) এর প্রচেষ্টায় মেয়েদের স্কুলের যাত্রা শুরু অর্থাৎ সমাজে নারী শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে প্রগতিশীলধারায় পরিচালিত করার লক্ষ্যে আজ (২০২৩ ইং) থেকে ৬২ বছর আগে গৌরীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করেছিল যা আজকের গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। পাকিস্তান আমলে আব্দুল হামিদের প্রচেষ্টায় বড় তরফ জমিদার বাড়ির অর্ধেক স্কুলের অধীন বা হস্তক্ষেপে চলে আসে। আর বাকি অর্ধেকে রয়েছে ই্উনিয়ন ভূুমি অফিস, বিআরডিবি অফিস, দোকানপাট, বসবাসের ঘরবাড়ি, সরকারি জায়গা ইত্যাদি অন্যতম।
রামমণি দেবীর ছেলে সূর্যকান্তের বংশ :
সূর্যকান্ত লাহিড়ি পাবনা জেলার শালগাড়িয়া গ্রামের রামমোহন ভট্টাচার্যের মেয়ে ব্রহ্মময়ী দেবীকে বিয়ে করেন। সূর্যকান্ত ধর্মনিষ্ঠ এবং সাধু-প্রকৃতির ছিলেন। তীর্থ ভ্রমণ উপলক্ষে স্ত্রীসহ ভারতের গয়া জেলার কাছে কোনও স্থানে বিসূচিকা বা কলেরায় অকালে মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুর অনেকদিন পর ব্রহ্মময়ী দেবী অবনীকান্ত লাহিড়িকে দত্তক নেন। ব্রহ্মময়ী বিষয়কর্মে বিশেষ দক্ষ ছিলেন। তিনি নিজেই জমিদারির বিশেষভাবে উন্নতি করে গিয়েছেন। দত্তক ছেলে অবনীকান্ত বড়ই অমিতব্যয়ী ও বিবেকহীন বলে ক্রমে ক্রমে ঋণগ্রস্ত হয়ে ব্রহ্মময়ী দেবীর প্রায় সমস্ত সম্পত্তিই হারায়। তার সম্পত্তির অংশ গৌরীপুরের ব্রজেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, কৃষ্ণপুরের স্বর্ণময়ী দেবী ও কালীপুর ছোট তরফের ধরণীকান্ত লাহিড়ি চৌধুরী মতো কয়েকজন জমিদার কিনেছিলেন।
অবনীকান্ত লাহিড়িই দক্ষিণ ছয় গন্ডার পত্তন ঘটিয়েছিলেন। ফলে গৌরীপুর পৌর এলাকায় একটি স্থানের নামকরণ হয় ছয়গন্ডা। ক্রিয়েটিভ অ্যাসোসিয়েশন এবং দি ইলেক্টোরাল কমিটি ফর পেন অ্যাফেয়ার্স-এর যৌথ উদ্যোগে মোমেনসিং ও জাফরশাহী পরগনার প্রাচীন নিদর্শন খোঁজার জন্য ২০২০ হতে জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমান প্রজন্ম জমিদারির সঠিক ইতিহাস কেউ জানে না। ২০২৩ সালে গৌরীপুরের ঐতিহাসিক কালীপুর এলাকায় জরিপের সময় এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে ছয়গন্ডা জমিদারি বিষয়ে কথা হয়।
গৌরীপুর সরকারি কলেজে পিছনে কৃষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দা ৭৩ বছর বয়সি দেবব্রত সরকার (ভানু বাবু) জানান, সাড়ে পাঁচশ একর জয়গায় নিয়ে গঙ্গাসাগর নামে একটি বড় পুকুর। পুকুরটির দক্ষিণে ছিল দক্ষিণ ছয়গন্ডার কাছারি। জায়গাটি লুপ্ত হলেও থাকে তার ইতিহাস। তারই ধারাবাহিকতায় অতীতকালের এ বাড়িটির কথা লোকান্তরে আজও রয়েছে মানুষের মনে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মৃতি হিসেবে।
হরসুন্দরী দেবীর ১৩ গন্ডার জমিদাড়ির হিস্যাঃ
হরসুন্দরী দেবী স্বামী ও ছেলে ভবানীকান্তের মৃত্যুর পর অভয়াকান্ত নামক এক বালককে দত্ত নেন। অভয়াকান্ত ইংরেজি ১৮৪০ সালের জানুয়ারি মাসে অর্থাৎ বাংলা ১২৪৬ সালের ২৯ মাঘ মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অতিশয় বলিষ্ঠ ও তেজস্বী পুরুষ ছিলেন। রামগোপালপুরের জমিদার শ্রী শৌরীন্দ্র্রকিশোর রায় চৌধুরীর উদ্ধৃতি থেকে জানা যায় যে, “সরলতা উদারতা তাহার চরিত্রের প্রধান ভূষণ ছিল। বীরোচিত ক্রীড়ায়, অশ্বারোহণে, মল্লযুদ্ধে, ব্যাঘ্রশিকারে, অভয়াকান্ত বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিলেন। শারীরিক বলের জন্য তিনি সর্বত্র পরিচিত ছিলেন। সঙ্গীতশাস্ত্রে তাহার অনুরাগ ছিল। বেহালা বাদনে তিনি পারদর্শিতা লাভ করিয়াছিলেন। অভয়াকান্ত প্রথমত ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত পল্লীগ্রামের কালীসুন্দরী দেবীকে বিবাহ করেন। কিন্তু তাহার গর্ভজাত কোন সন্তান জীবিত না থাকায় নদীয়া জেলার অন্তর্গত কৃষ্ণনগর নিবাসী দীনবন্ধু চৌধুরির কন্যা স্বর্ণলতা দেবীর পাণিগ্রহণ করেন। এই দ্বিতীয় বিবাহের ফলে এক পুত্র ও তিন কন্যা জন্মে। দুই কন্যা অভয়াকান্তের জীবিতাবস্থাতেই কালগ্রাসে পতিতা হন।” স্বর্ণলতা দেবী স্বামী অভয়াকান্ত, ছেলে বিজয়াকান্ত ও মেয়ে হেমলতা দেবীকে রেখে ইংরেজি ১৮৯০ এবং বাংলা ১২৯৬ সালের জ্যৈষ্ঠ মাসে ইহলোক ত্যাগ করেন। এটা ছিল একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। স্ত্রীর মৃত্যু শোকে বাংলা ১২৯৯ (ইংরেজি ১৮৯৩) সালের ২৮ আশ্বিন মাসে তিনিও পরলোক গমন করেন।
অভয়াকান্তের অসহায় ও এতিম পুত্র ও কন্যাঃ
১৯১১ সাল হতে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত সন্ধান সঠিকভাবে জানা যায়নি। প্রভাবতী দেবীর মৃত্যুর পর বিজয়াকান্তের জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিয়ে করেছিল কি-না অথবা দত্তক নিয়েছিলেন কি না, তা সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি। তবে ঢাকা গেজেট, ১৯/০২/১৯৫৫ ইং প্রকাশনার এবং প্রজ্ঞাপন নং ১৭৬৮ এল আর (২৭/০১/১৯৫৫ইং) সূত্র থেকে নৃপেন্দ্রকান্ত লাহিড়ি নামে জমিদারের নাম পাওয়া যায়। নৃপেন্দ্রকান্ত লাহিড়ির সাথে ‘গং’ যুক্ত রয়েছে। এ চিত্র যার সামনেই প্রকাশ হয়; সকলে ধারণা করবে বিজয়াকান্তের ছেলে নৃপেন্দ্রকান্ত লাহিড়ি এবং ‘গং যুক্ত হওয়ায় উত্তরাধিকার হিসেবে আরও ছেলে বা নাতনী রয়েছে।
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় বিজয়াকান্তের পরিবার ভারতে চলে যান। বিজয়াকান্তের জমিদারবাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের ২নং গৌরীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস, বিআরডিবি অফিস, পুরাতন মন্দিরের দক্ষিণের বাড়িঘর কোয়ার্টার বা লিজ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার কালীপুর বড়তরফ জমিদারবাড়ির তিনটি হিস্যার সন্ধান পাওয়া গেছে। বর্তমানে কয়েকটি স্থাপনা নিয়ে কালীপুর বড়তরফ জমিদারবাড়ি অবস্থিত। যদিও সেখানকার সবগুলো ভবন একসঙ্গে স্থাপিত হয়নি। এই প্রাসাদের অন্তর্গত বিভিন্ন ভবন জমিদার পরিবারের বিভিন্ন উত্তরাধিকার বিভিন্ন সময়ে স্থাপন করেছিল।
১. ময়মনসিংহের বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ জমিদার— শ্রী শৌরীন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী (রামগোপালপুর এস্টেট এর জমিদার ও রাজা যোগেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর ৩য় পুত্র)
২. ময়মনসিংহের ইতিহাস ও ময়মনসিংহের বিবরণ— শ্রী কেদারনাথ মজুমদার
৩. ময়মনসিংহের জমিদারি ও ভূমিস্বত্ব— মো. হাফিজুর রহমান ভূঞা
৪. ব্রিটিশ ভূবিদ মেজর জেমস রেনেলের অংকিত কয়েকটি মানচিত্র
৫. সিরাজের পুত্র ও বংশধরদের সন্ধানে— ভারত উপমহাদেশের অন্যতম কৃতী ইতিহাসবিদ ও প্রফেসর ড. অমলেন্দু দে
৬. নেত্রকোণা জেলার ইতিহাস— আলী আহম্মদ খান আইয়োব
৭. উইকিপিডিয়ার উল্লেখিত শিরোনামগুলো থেকে (ক) গৌরীপুর উপজেলা – উইকিপিডিয়া (খ) কলকাতা – উইকিপিডিয়া (৮) বাংলাপিডিয়া
ইমেইল: raihanuddinsarker@