কিশোরকে মাথা ন্যাড়ার ঘটনায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা: গ্রেপ্তার ২ : হুমকী
আসামী পক্ষরা ভিকটিম পরিবারকে শায়েস্তা করতে মিথ্যা মামলা দায়েরের হুমকি
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নেত্রকোণার কেন্দুুয়ায় চুরির অপবাদ দিয়ে আবুলায়েছ নামে ১৩ বছরের এক কিশোরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়াসহ পরিবারের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের ঘটনায় থানায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ভিকটিম কিশোরের মা নুরেছা বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে ধারা ৭০ শিশু আইন, ২০১৩ মামলাটি দায়ের করেছেন।
ওই মামলায় এজাহার নামীয় আসামী ৬ জন। আর অজ্ঞাত রাখা হয়েছে ১৫/২০ জনকে। প্রধান আসামী করা হয়েছে চা দোকানি ও ভিকটিমের চাচা মতিউর রহমান ওরফে অবিশ্বাসকে (৬০)। মামলা দায়ের পর আটক ইউপির সবুজ মিয়া ও মাতাব্বর আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে নেত্রকোণা আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
মামলা দায়ের পর থেকে আসামী পক্ষের লোকজন নানাভাবে প্রাণনাশে হুমকী ধমকীর শিকার হচ্ছে এমন অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনরা। তাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে শায়েস্তা করা হবে এমন অভিযোগ উঠে আসছে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনদের মূখ থেকে।
বাদীর অভিযোগে বলেন, গত ৭ আগষ্ট রাতে ভিকটিম ছেলেকে মিনিট কার্ড আনার জন্য বাজারে পাঠায়। পরে চোর সন্দেহে তাকে আটক করে গ্রামের মানুষের হাতে তুলে দেন প্রধান আসামী চা দোকানি ও ভিকটিমের চাচা মতিউর রহমান ওরফে অবিশ্বাস। রাতে তাকে আটকে নির্যাতন করে এজাহার নামীয় আসামীরা। পরেরদিন বাজারে সালিশ বসিয়ে ভিকটিম কিশোরকে বেত্রাঘাত ও মাথা ন্যাড়া করে দেয়। ভিকটিম কিশোরকে কেন্দুুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতির জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক।
বাদী নুরেছা জানান, আমিতো কাল থেকেই হাসপাতালে ছেলের চিকিৎসাকাজে ব্যস্ত আছি। বাড়ি যারা আছে তাদেরকে আসামী পক্ষের লোকজন বিভিন্ন ভাবে প্রাণনাশের হুমকী ধমকী দিচ্ছে বলেও জানান তিনি। ভিকটিমের চাচা লাইচউদ্দিন জানান, আসামী পক্ষের লোকজন প্রকাশে আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকী দিচ্ছেন। তারা তো এলাকার প্রভাবশালী তাই আমরা খুব আতঙ্কে আছি। আসামী পক্ষরা ভিকটিম পরিবারকে শায়েস্তা করতে মিথ্যা মামলা দায়েরের পায়তারা চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কেন্দুুয়া থানার ওসি আলী হোসেন পিপিএম জানান, মামলা দায়ের পর আটকদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের ধরতে এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
কেন্দুুয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ ফারাবী জানান, ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকী দিচ্ছে এমন সুনিদৃষ্ট অভিযোগ আমার কাছে নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।