কেন্দুয়ায় একুশে পদকপ্রাপ্ত মরমী বাউল সাধক জালাল উদ্দীন খাঁকে স্বরণ

প্রকাশিত: ৩:৫০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১, ২০২৪

মজিবুর রহমানঃ
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কীর্তিমান পুরুষ একুশে পদকপ্রাপ্ত মরমী বাউল সাধক জালাল উদ্দীন খাঁর ৫২তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে।

বুধবার (৩১ জুলাই) কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের উদ্যোগে রাত ৮টার দিকে ক্লাব কার্যালয়ে এক স্বরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাব সভাপতি আসাদুল করিম মামুন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো.লাইমুন হোসেন ভূঞার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, ইউপি চেয়ারম্যান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মো. জাকির আলম ভূঞা, কেন্দুয়া উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি শফিকুর রহমান, লেখক নাট্যকার সাংবাদিক রাখাল বিশ্বাস প্রমূখ।

সভায় জনপ্রতিনিধি,শিক্ষক,গণমাধ্যম কর্মী, রাজনৈতিক কর্মী, বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার শুরুতেই মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দাঁড়িয়ে ১মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে একে একে প্রয়াত জালাল খাঁর জীবনদর্শন নিয়ে আলোকপাত করেন। তাছাড়া পারিবারিক ভাবেও বিভিন্ন অনুষ্ঠান মালায় গুণী সাধককে স্বরণ করা হয়। বুধবার রাতব্যাপী বাউল গানের আসর হয়। প্রথিতযশা বাউল শিল্পী সুনীল কর্মকর্তাসহ অন্যরা গান পরিবেশন করেন।

উল্লেখ, জালাল উদ্দিন খাঁ ১৮৯৪ সালের ২৫ এপ্রিল নেত্রকোনার আসদহাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭২ সালে ৩১ জুলাই পরলোক গ্রমন করেন। নিজ গ্রাম কেন্দুুয়া উপজেলার সিংহেরগাও গ্রামের বাড়ির আঙ্গিনায় তাকে সমাহিত করা হয়। এ বছর সরকার জালাল উদ্দীন খাঁকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করেন।

তিনি বিংশ শতাব্দীর বিশ ষাটের দশক পর্যন্ত এই গীতিকবি সাধনায় সক্রিয় ছিলেন। তিনি বহু গান রচনা করে গেছেন। তার জীবদ্দশায় চার খন্ডের ‘জালাল গীতিকা’ গ্রন্থে ৬৩০ টি গান প্রকাশিত হয়েছিল। তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছিল ‘জালাল গীতিকা’ ৫ম খন্ড। সেই খন্ডে গানের সংখ্যা ৭২ টি। তাঁর মোট ৭০২ টি গান নিয়ে ২০০৫ সালে মার্চে প্রকাশিত হয় জালাল গীতিকা সমগ্র।

‘মানুষ থুইয়া খোদা ভজ’,এই যন্ত্রণা কে দিয়েছে ? মানুষ ভজ কোরান খোঁজ, পাতায় পাতায় সাক্ষী আছে ।’
জালাল উদ্দীন খাঁর বিখ্যাত উক্তি-‘ আমি বিনে কে বা তুমি দয়াল সাঁই, আমি যদি নাহি থাকি,তোমার জায়গায় ভবে নাই, যা করেছ আমায় নিয়ে সৃষ্টিকে সৌন্দর্য গিয়ে মহা প্রাণে করেছ ঠাঁই। ’

জালাল তার গানগুলোকে বিভিন্ন ‘তত্ত্ব’ এ বিন্যস্ত করে প্রকাশ করেন।সেগুলি আত্মতত্ত্ব,পরমতত্ত্ব, নিগূঢ়তত্ত্ব, লোকতত্ত্ব, দেশতত্ত্ব ও বিরহতত্ত্ব নামে পরিচিত। বিশ্ব রহস্য নামে একটি প্রবন্ধ গ্রন্থও রয়েছে তাঁর।