কেন্দুয়ায় দোকানঘর দখল নিয়ে সংঘর্ষ, দুইজন গুলিবিদ্ধসহ আহত অর্ধশত
মজিবুর রহমানঃ
নেত্রকোণার কেন্দুয়া পৌর শহরে একটি দোকানের দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের দুইজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত অর্ধশত লোক জন আহত হয়েছেন।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শুরু হয়ে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী এই সংঘর্ষ চলে। আহতদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে রাতেই ভর্তি করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল ভর্তিকৃতরা হলেন উপজেলার বাট্রা গ্রামের লিটন খানের ছেলে রনি খান (২২), আব্দুল কদ্দুছের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৩), গোলাম মোস্তাফা খানের ছেলে রাজন খান, কান্দিউড়া গ্রামের অনছার উদ্দিনের ছেলে বাবর উদ্দিন ও অবিকুল মিয়া।
অবিকুল মিয়ার পুরো পরিচয় জানা যায়নি। বাকি আহতদের মধ্যে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অন্যরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন ।
আহতদের মধ্যে রনি খান ও রফিকুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার ধারণা কথা জানিয়েছেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ অরুপ কুমার সরকার।
সুত্র জানায়, কেন্দুয়া পৌর শহরের মধ্যবাজারে একটি দোকানের মালিকানা নিয়ে ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন সঙ্গে দিগদাইড় গ্রামের আল আমিনের সাথে বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল। ১২/১৩ বছর ধরেই দেনদরবার হচ্ছে। দুইদিন আগে আল আমিন ওই দোকানঘরে তালা লাগিয়ে দেন। বিষয়টি বাট্টা গ্রামের মাতাব্বর ও বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভূঁইয়াকে জানালে তিনি তালা খুলে দেন। এরপর বুধবার সন্ধ্যার পর ফের তালা লাগিয়ে দেয় আল আমিন। এনিয়ে আল আমিনের সাথে জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার বাকযুদ্ধের এক পর্যায়ে তাদের অনুসারিদের মাঝে সংঘর্ষ বাঁধে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জড়ানো এই সংঘর্ষ প্রায় দুই ঘন্টা চলার পর রাত ১০ টার দিকে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এরিপোর্ট লেখা পর্যস্ত থানায় কোন পক্ষই মামলা করেনি। দোকানের মালিক ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন জানান,তিনি এই দোকানটি প্রায় ৩০ বছর পূর্বে খরিদা সুত্র মালিক হন। এরপরে আল আমিনের কাছে দোকান ঘরটি ভাড়া দিয়েছিলেন। এরপরে তিনি নিজের ঘর দাবী করে আসছিল। ১২/১৩ বছরে অন্তত ১৫/২০ বার দেনদরবার হয়েছে। সকল সালিশ বোডই আমার পক্ষে রায় দেন। দুইদিন আগে হটাৎ করে দোকান ঘরে তালা লাগিয়ে দেয় আল আমিন। বেশ কয়েকটি শালিস দরবারে জসিম ভাই ছিলেন তাই তাকে জানালাম। তিনি এসে তালা খুলে দিলে বুধবার সন্ধ্যার পরে আবার তালা লাগিয়ে দেয়। এনিয়ে জসিম ভাইয়ের সাথে তাদের কথার কাটাকাটি থেকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তিনি আরো বলেন, আমরা নিরীহ মানুষ। ব্যবসা আমাদের পেশানেশা। আমি ঝগড়াবিবাদ চাই না। শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। এ বিষয়ে জানতে আল আমিনের মুটোফোনে কথা হলে তিনি ব্যস্ত থাকায় পড়ে কথা বলবেন বলে জানান।
জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে ও উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম বলেন, রনি খান ও রফিকুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আল-আমিন খন্দকার যুবলীগ কর্মী। অন্যায়ভাবে জামাল উদ্দিনের দোকান দখল করতে গেলে দিগদাইর ও বাট্রা গ্রামবাসী দুই পক্ষ হয়ে সংঘর্ষে জড়ান। তিনি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের উদ্ধারের করতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ প্রতি দাবী জানান।
কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, এঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। বর্তমানে পরিস্তিতি শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত সহায়তা করবেন
বলে জানান ওসি।