কেন্দুুয়ায় জনবল সংকটে ব্যাহত প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম

প্রকাশিত: ৩:০৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩

মজিবুর রহমান :
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় জনবল সংকটের ফলে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত
হচ্ছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ১৩টি পদের মধ্যে ৯টি পদই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় একদিকে যেমন হচ্ছে না নিয়মিত স্কুল মনিটরিং ও তেমনি প্রশাসনিক কাজ করতে এসে গ্রামের শিক্ষকরা হচ্ছেন চরম হয়রানির শিকার।

কেন্দুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে ১৮২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয় দেখভালের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে অনুমোদিত
রয়েছে ১৩ টি। পদ হলো ১জন শিক্ষা অফিসার, ৭ জন সহকারী শিক্ষা অফিসার,৪ জন অফিস সহকারী ও একজন অফিস সহায়ক। এরমধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৩ জন সহকারী শিক্ষা অফিসার, ১জন অফিস সহকারী।

১৩ জনের কাজ ৪ জনে করতে গিয়ে অনেক বেগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। অফিস প্রধানের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মদন উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে। তিনি সপ্তাহে ১/২ দিন এসে জরুরি কাজ গুলো কোন মতে সারলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এসব পদ শুন্য থাকায় একদিকে নিয়মিত বিদ্যালয় তদারকির হয় না অপরদিকে দাপ্তরিক কাজ সাড়তে গ্রাম থেকে শিক্ষকরা শিক্ষা অফিসে এসে ঘন্টা পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। ফলে কাজ করতে এসে শিক্ষকরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে।

কর্মরত ৩ জন সহকারী শিক্ষা অফিসার থেকে একজনকে ভারপ্রাপ্ত অফিস প্রধান করা হলে কিছুটা হয়রানি মুক্ত হবেন দাবী শিক্ষকদের। উপজেলার স্কুলগুলো নিয়ে ৭টি সাবক্লাস্টার গঠিত থাকলেও নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে সাবক্লাস্টার মিটিং কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে চালু রয়েছে মাসিক সমন্বয় সভাটি।

বিঞ্চপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.জামিরুল ইসলাম জানান, শিক্ষা অফিসে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য থাকায় আমরা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি।
দাপ্তরিক কাজ করতে আসা গ্রামের শিক্ষকরা শিক্ষা অফিসে এসে ঘন্টা পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়। বড় সমস্যা হচ্ছে আমাদের অফিস প্রধান নেই। মদন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দ্বায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। যেকারণে জরুরি কিছু কাজ থাকে সেগুলো সময় করা যাচ্ছে না।

জরুরী ভিত্তিতে যে ৩ জন সহকারী শিক্ষা অফিসার কর্মরত আছেন এখান থেকে একজনকে ভারপ্রাপ্ত অফিস প্রধান হিসেবে দ্বায়িত্ব দেওয়াসহ শূন্য পদগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারী পদায়নের জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে জোর দাবী করেন তিনি।

কেন্দুয়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম জানান, ১৮২ স্কুলের মধ্যে ৯০ টিতে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। শিক্ষা অফিসারের পদসহ ৪ জন সহকারী শিক্ষা অফিসার, ১ জন
উচ্চমান সহকারী, ১ জন অফিস সহকারী, ১ জন হিসাব সহকারী ও অফিস সহায়ক পদ শূণ্য।
১৩ জনের কাজ ৪ জনে করি বুঝতেই পারছেন কেমন আছি আমরা। জনবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো.নুরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য থাকায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই। সব মিলে প্রাথমিকে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও ইতিবাচক কোন সাড়া পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।