কেন্দুুয়ায় ৪২ ঘন্টা পর নিখোঁজ সেই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: ৬:৩০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২৪

মজিবুর রহমানঃ
কেন্দুুয়ায় পুলিশ দেখে ভয়ে জুয়ার আসর থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়া যুবকের মৃতদেহ প্রায় ৪২ ঘন্টা পর উদ্ধার করেছে কেন্দুুয়া ও মদন থানার পুলিশ।

গতকাল রোববার বেলা ১২টার দিকে মদন উপজেলার চন্দ্রতলা বাসুরি এলাকায় কৈজানি নদীতে ভাসমান অবস্থায় মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। মদন থানার পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল করে ময়নাতদন্ত জন্য নেত্রকোণা মর্গে পাঠিয়েছেন।

সুত্র জানায়, কেন্দুুয়া ও মদন উপজেলা সীমানাকে ভাগ করেছে কৈজানি নদী। নদীর পশ্চিম তীরে কেন্দুুয়ার তাম্বূলিপাড়া আর পূর্ব তীরে মদনের চন্দ্রতলা গ্রাম। হাওড় বেষ্টিত ওই দুই উপজেলার সীমান্ত এলাকায় বর্ষা মৌসুমে ট্রলার নৌকায় একাধিক জুয়ার আসর বসে।

গত শুক্রবার বিকাল ৬টার দিকে কেন্দুুয়া উপজেলার তাম্বূলিপাড়া এলাকায় কৈজানি নদীতে ট্রলার নৌকায়
জুয়ার আসর বসিয়ে অন্ততপক্ষে ৩৫/৪০ লোক তাস দিয়ে জুয়া খেলছিল। গোপন খবর পেয়ে কেন্দুুয়া থানার পুলিশ ওই জুয়ার আসরে হানা দেয়। এসময় পুলিশের গ্রেপ্তারের ভয়ে দিকবেদিক ছুটাছুটি করে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে বেশ কয়েকজন জুয়ারি। ঝাঁপিয়ে পড়া জুয়ারিদের সঙ্গে ছিলেন নিহত হালিম মিয়া। এসয়ম পুলিশ ৮ জন জুয়ারিকে আটক করতে সক্ষম হয়েছিল। পরে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়া অন্যরা তীরে উঠতে পারলেও নিহত হালিম মিয়া আর উঠতে পারেনি। সঙ্গীরা হালিম মিয়াকে না পেয়ে বাড়িতে খবর দিলে পরিবার ও স্বজনরা ওইদিন রাতভর বিভিন্ন উপায়ে নদীর পানিতে ও সম্ভব্য স্থানে তাকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন শনিবার সকাল বেলা কেন্দুুয়া ফায়ার সার্ভিস খবর দেন। পরে কেন্দুুয়া ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ময়মনসিংহ থেকে একদল ডুবুরি আনা হয়। ডুবুরি দলটি শনিবার দিনভর উদ্ধার অভিযান চালিয়েও কোন হদিস পায়নি।

রোববার ভোর থেকে পরিবারের লোকজন নৌকা নিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে হালিমের মৃতদেহটি সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দুরে মদনের চন্দ্রতলা বাসুরি এলাকায় দেখতে পান তারা। পরে কেন্দুুয়া ও মদন থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। উভয় থানার পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মদন থানায় নিয়ে যায় ।

এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মৃতদেহটিকে এক নজর দেখতে শত শত উৎসুক মানুষ নৌকা নিয়ে ভিড় করেন। হালিমের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারে বইছে শোকের মাতম। এলাকায় শোকের আবহ বিরাজ করছে। নিহত হালিম দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া প্রবাস থেকে মাসদেড়েক পূর্বে সে ছুটি নিয়ে বাড়ীতে আসছিল ।তার আপন বলতে স্ত্রী, মা-বাবা, এক ভাই ও দুই বোন রয়েছেন।

এব্যাপারে কেন্দুুয়া থানার ওসি এনামুল হক জানান, যেহেতু মৃতদেহটি মদন এলাকায় পাওয়া গেছে তাই নিয়মানুযায়ী মদন থানার পুলিশ লাশের ময়নাতদন্ত করছেন। লাশ উদ্ধারের সময় কেন্দুুয়া থানার পুলিশও ছিল। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানান ওসি।