কোটা আন্দোলনে গিয়ে নিখোঁজ সুনামগঞ্জের যুবক, ১২ দিন পর হাসপাতালের মর্গে মিলে লাশ

প্রকাশিত: ১২:১০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২৪

মোঃ কামরুল ইসলাম রতনঃ
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরের পোশাকশ্রমিক মোঃ আয়াতুল্লাহ (২২) গাজীপুর থেকে সফিপুর আনসার একাডেমির সামনে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।

গত ৫ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে পুলিশের সাথে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছিল আন্দোলনকারীদের। সেইসাথে চলছিল পুলিশের মুহুর্মুহু গুলি। এক পর্যায়ে আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না আয়াতুল্লাকে। নানা জায়গায় খোঁজ নিয়েও তার কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।

নিহত আয়াতুল্লাহ সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের জলুষা গ্রামের কৃষক মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

শেষে গত শুক্রবার টিভিতে বেওয়ারিশ লাশের খবর দেখে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে তাঁর লাশের সন্ধান পেয়েছেন আয়াতুল্লাহর স্বজনরা।

পরে লাশ বুঝে পেতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়কসহ বেশ কিছু তাদের সহায়তা করেন। সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে শনিবার বিকাল পাঁচটার দিকে লাশ বুঝে পান স্বজনরা। তারপর লাশ নিয়ে রওনা হন গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের জলুষা গ্রামের উদ্দেশে।

দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট আয়াতুল্লাহ। গ্রামের একটি মাদ্রাসায় মিজান পর্যন্ত (ষষ্ঠ শ্রেণি) পড়াশোনা করে আয়াতুল্লাহ। অভাবের কারণে আর পড়াশোনা আর করা সম্ভব হয়নি। দেড় মাস আগে চাকরির উদ্দেশ্যে ঢাকায় গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হলো আয়াতুল্লাহ।

তাঁর বড় ভাই সোহাগ মিয়া গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি পোশাক কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করেন। অভাবের তাড়নায় দেড়মাস আগে বড় ভাইয়ের কাছে গিয়ে আয়াতুল্লাহ আরেকটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ নেন।

গত ৫ আগস্ট গাজীপুরের সফিপুর আনসার একাডেমির সামনে ফুফাতো ভাই আরিফুল ইসলাম সুলতানের সাথে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন আয়াতুল্লাহ। ওই দিন আনসার একাডেমির সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। পরে বিকেল থেকে তার আর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।

এরপর তাঁর বড় ভাই সোহাগ মিয়াসহ স্বজনরা মিলে গাজীপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পাননি। শেষে টিভিতে বেওয়ারিশ লাশের খবর দেখে ১৬ আগস্ট রাতে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে তাঁর লাশের সন্ধান পাওয়া যায়।

আয়াতুল্লাহর শরীর জুড়ে অগণিত ছররা গুলি লেগেছে বলে জানান ফুফাতো ভাই আরিফুল ইসলাম সুলতান।

নিহত আয়াতুল্লাহর বড় ভাই সোহাগ মিয়া শনিবার ১০টার সময় জানান, এই মুহূর্তে লাশ নিয়ে নেত্রকোনা শহর পর্যন্ত পৌছেছি। বাড়ি পৌছতে আরও দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগবে। এখনো জানাযার সময় দেওয়া হয়নি। বাড়ি পৌছার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই হত্যাকান্ডের বিচার চান তিনি।

নিহত আয়াতুল্লাহর ফুফাতো ভাই আরিফুল ইসলাম সুলতান বলেন, ওইদিন আয়াতুল্লাহ আর আমি একত্রে সফিপুর আনসার একাডেমির সামনে গিয়ে আন্দোলনে যোগ দেই। ধাওয়া পাল্টা