‘ঘুষ দিয়ে ৩ বছরেও মিলেনি সরকারি ঘর’, সংবাদ প্রকাশের পর টাকা ফেরত
মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) সংবাদদাতাঃ
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে সরকারি আশ্রয়নের ঘর দেওয়ার আশ্বাসে এক নারীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের সংবাদপত্রের পর গতকাল সোমবার টাকা ফেরত দিয়েছেন। তবে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও ওই নারীর ভাগ্যে জুটেনি সরকারি ঘর। পরে তিনি ওই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ২৫ অক্টোবর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযুক্তের নাম মো. শাহীন আকন্দ (৪৮)। তিনি উপজেলার সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নের কেওয়ারদিঘী গ্রামের মৃত আ. মান্নানের ছেলে। শাহীন আওয়ামী লীগ কর্মী। তবে তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা বলে পরিচয় দেন বলে জানা গেছে। আর ভুক্তভোগী নাসিমা আক্তার একই ইউনিয়নের রামজীবনপুর গ্রামের আলম মিয়ার স্ত্রী। সোমবার মোহনগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে নাসিমা আক্তার জানান, সরকারি আশ্রয়ের ঘর পাওয়ার আশায় তিন বছর আগে আওয়ামী লীগ নেতা শাহীন আকন্দকে ২০ হাজার টাকা দেন নাসিমা। আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় দ্রুত সময়ে ঘর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তবে তিন বছর কেটে গেলেও ঘর আর পাওয়া হয়নি নাসিমার। তবে ঘর না পেয়ে টাকা চাইতে গেলে নাসিমাকে উল্টো হুমকি ধমকি দেন শাহীন। সরকার পতনের পর গত ৪ অক্টোবর টাকা ফেরত চাইতে গেলে ফের ভয়ভীতি ও হুমকি দেন শাহীন।
ভুক্তভোগী নাসিমা আক্তার জানান, গরীব মানুষ ভাঙা ঘরে ত্রিপলের ছাউনি দিয়ে পোলাপান নিয়ে বসবাস করি। শাহীন এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা পরিচয় দেয়। উপজেলার বড় বড় নেতাদের সাথে তার সম্পর্ক। আমাকে ঘর পাইয়ে দিবে বলে অফিস খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা দাবি করে। সুদে ২০ হাজার টাকা এনে তার হাতে তুলে দেই। তিন বছরে সুদ বেড়ে অনেক গুণ হয়েছে। সুদের জের এখনো টেনে যাচ্ছি।
অভিযুক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কর্মী শাহীন আকন্দ বলেন, অভিযোগটি মিথ্যা। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে গতকাল দুপুরে সংবাদ প্রকাশের পর সন্ধ্যার পরেই টাকা ফেরত দেওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
মোহনগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন বলেন, ১০ হাজার টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন শাহীন। তবে এরমধ্যে ৩ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে বলেও জানিয়েছে। বাকি টাকা দিয়ে দেবে বললেও আজ-কাল করে সময় পার করছেন ।