দুঃস্থ মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছেন হোসনে আরা বেগম
৪৩ বছর বয়সী এই নারী নিজস্ব অর্থায়নে নিজস্ব ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে সমাজের অবহেলিত স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা, গরিব অসহায় নারীদের কর্মমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন
কাওসার খান রনি।।
নেত্রকোণায় দুঃস্থ মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এক যুগের অধিক সময় ধরে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে রূপালী মহিলা উন্নয়ন সংস্থা। ২০০৬ সালে নারী উদ্যোক্তা হোসনে আরা বেগম ইসলামের ইতিহাসে অনার্স মাস্টার্স শেষ করে গতানুগতিক ধারায় নিজের কর্মসংস্থান তৈরির কথা চিন্তা না করে সমাজের অন্য ১০ জন অবহেলিত নারীর জীবনমান উন্নয়নে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ২০০৭ সালে ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ২০০৯ সালে নিবন্ধন নিয়ে জেলার সদর উপজেলায় ছোটগাড়া এলাকায় কাজ করছেন তিনি।
তার এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন দেশি-বিদেশি অনেক সম্মাননাও। বর্তমানে হোসনে আরা এই সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। বঙ্গবন্ধু ও জয় বাংলা স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষ্যে “বিশ্ব মানবতা ও শান্তি রক্ষায় শেখ হাসিনার সরকারের অবদান” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে মানব সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য বিশ্ব জাতিসংঘ দিবস এ্যাওয়ার্ড- ২০২১, বঙ্গবন্ধু একাডেমী থেকে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি সম্মাননা-২০২১, মাদার তেরেসা স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে সমাজ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য মাদার তেরেসা গোল্ডেন এ্যাওয়ার্ড -২০২১ সহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি। ২০২২ সালে জয়িতা পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৭৯ সালে জেলা সদরের ছোটগাড়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন এই প্রতিভাবান উদ্যোক্তা। ৪৩ বছর বয়সী এই নারী নিজস্ব অর্থায়নে নিজস্ব ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে সমাজের অবহেলিত স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা, গরিব অসহায় নারীদের কর্মমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
এছাড়াও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহায়তায় অন্তত ২৪০ জন নারী, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ৬০ জন নারীকে প্রশিক্ষিত করেছেন। তাছাড়া এনজিও ফাউন্ডেশন ও নিজস্ব তহবিলে অন্তত ৪২টি সেলাই মেশিন বিতরণ করেন। যার মাধ্যমে প্রশিক্ষিত কর্মীরা স্বাবলম্বী হয়ে পরিবারের বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত হচ্ছে।
রূপালী মহিলা উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে হোসনে আরা বেগম বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১ হাজার উপকারভোগী কর্মজীবী মা’কে সেবা দিচ্ছেন। পাশাপাশি শিশুশ্রম বন্ধেও প্রায় ১ হাজার শিশুকে প্রাথমিকভাবে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছেন। কলমাকান্দায় প্রায় ২৭০ জন কিশোর-কিশোরীকে বয়সন্ধীকালীন স্বাস্থ্য সেবা ও প্রায় ৩শতাধিক কিশোরীকে স্বাস্থ্য উপকরণ দিয়ে সেবা দিচ্ছেন।
এমতাবস্থায় দেশ ও সমাজের জন্য একটি রুলমডেল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সুধিজনেরা।