দুর্গাপুরে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বৃদ্ধ বাবা-মা ফিরে পেল সম্পত্তি
রাজেশ গৌড়ঃ
কৌশলে বাবার সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে নিয়েছেন তিন ছেলে। ছেলের বউ দিয়েছে টাকা চুরির অপবাদ। পেটের তাগিদে তাদের করতে হয়েছে ভিক্ষা। মানবেতর জীবনযাপন করছেন বৃদ্ধ বাবা সুরেশ চন্দ্র দাস (৭০) ও বৃদ্ধ মা বেলি রাণী দাস (৬০)। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাবার সম্পত্তি ফিরিয়ে দিয়ে ভরণপোষনের দায়িত্ব নিলেন ছেলেরা।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার সাধুপাড়া এলাকার সুরেশ চন্দ্র দাসের চার ছেলে সন্তান নিয়েই চলছিলো তাদের সংসার। বাবা মায়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে কৌশলে শেষ সম্বল ২০ শতক জমির মধ্যে ১৮ শতক জায়গা তিন ছেলে শ্যামল, সাগর ও সজল তাদের নিজের নামে লিখে নিয়েছে। সবার বড় ছেলে পরিমল বাবার মতোই সহজ সরল হওয়ায় তাকে দেয়নি কিছুই।
সন্তানেরা আগে যেমন খোঁজ কবর নিতো কিন্ত সম্পত্তি লিখে নেয়ার পর প্রায়ই না খেয়ে থাকতে হয়েছে তাদের। পেটের তাগিদে দুইজনেই ভিক্ষাবৃত্তি করে খাবার জোগাতে হয়েছে। এরপর টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে ছেলের বউ বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তাদের। অপবাদ- অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে নদীর পাড়ে পুরাতন শাড়ি-কাপড় আর টিনের তৈরি ছোট্ট একটি ঘরে বসবাস করছেন তারা।
খবরটি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এলে ইউএনও মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান শনিবার ওই এলাকা পরিদর্শন করে ছেলেদের ডেকে এনে বাবার নামে থাকা সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে বলেন। এছাড়া বাবা মা জীবিত থাকাকালীন সময় পর্যন্ত ভরনপোষন বাবদ প্রত্যেক ছেলে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়াসহ অনতিবিলম্বে তাঁদের থাকার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। এ খবর প্রকাশিত হলে ওই এলাকায় আমি নিজে গিয়ে খোঁজ নিয়েছি। স্থানীয়দের সহায়তায় ছেলেদের ডেকে এনে সমস্ত বিষয় নিয়ে কথা বলি। ছেলেরা তাদের ভুল বুঝতে পেরে সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয়াসহ প্রত্যেক ছেলে তাদের বাবা-মায়ের ভরণ পোষনের দায়িত্ব ও থাকার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।