দুর্গাপুরে নানা পরিচয়ে প্রতারণা, অবশেষে হাতেনাতে ধরে থানায় দিলো ছাত্র-জনতা
রাজেশ গৌড়ঃ
ছিলেন একটি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের আয়া। তখন নানা অপকর্মের জন্য চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ। এরপর আরো বেড়ে যায় নানা পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ। অবশেষে হাতেনাতে ধরে থানায় দিলো ছাত্র-জনতা।
এমন ঘটনা ঘটেছে নেত্রকোনা দুর্গাপুর পৌর শহরের সাধুপাড়া এলাকায়। রবিবার দুপুরে তাকে হাতেনাতে ধরে ভুক্তভোগীরা। পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ও সাধারণ জনতা ওই প্রতারক নারীকে থানায় হস্তান্তর করে।
অভিযুক্ত নারীর নাম রহিমা আক্তার। তার বাড়ি দুর্গাপুর উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের কেট্টা গ্রামে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতারণার মাধ্যমে মাতৃকালীন ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ বাড়ি ও টিউবওয়েল দেয়ার কথা বলে বেশি অংকের টাকা উত্তোলন করে প্রতারক রহিমা আক্তার। পরপরই গা ঢাকা দিতেন। অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অভিযোগ রহিমা আক্তারের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, দুই বছর আগে পৌর শহরে দেশ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ে আয়া পদে চাকরি নেয় রহিমা আক্তার। তবে নানা অপকর্মের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরিচ্যুত করে। এরপরও গত কয়েক বছর ধরে স্কুলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাকরি দেওয়াসহ বিভিন্ন ভাতার নাম করে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এদিকে এই প্রতারককে ধরতে রবিবার সকাল থেকেই দুর্গাপুর পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় ভুক্তভোগীরা। দুপুরের দিকে সাধুপাড়া এলাকায় দেশ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ভুক্তভোগীরা হাতেনাতে তাকে আটক করে। পরে ভুক্তভোগীরা তাদের টাকা দাবি করলে নানা তালবাহানা দেখায় অভিযুক্ত রহিমা আক্তার।
ভুক্তভোগী মমতা বেগম জানান, পানির মটর দেয়ার কথা বলে আমার কাছে ১৩ হাজার টাকা নিয়েছে গত তিন বছর আগে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তার পেছনে ঘুরছি আজ দেবে কাল দেবে করে আমাদেরকে ঘুরাচ্ছে। মটর দেয় না টাকাও দেয় না। এছাড়াও বিরিশিরি এলাকা থেকে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মাতৃকালীন ভাতা বিধবা ভাতা দেওয়ার নাম করে পাঁচ হাজার দশ হাজার টাকা করেও নিয়েছে এই মহিলা।
অপর ভুক্তভোগী জুবাইদা আক্তার বলেন, প্রায় তিন বছর আগে মাতৃকালীন ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, টিউবওয়েল ও বাড়ি দেয়ার কথা বলে আমাদের ৭৫ জন মহিলার থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রহিমা আক্তার। এখন টাকা ফেরত চাইলে অস্বীকার যাচ্ছে। আমরা তাকে ধরে থানায় নিয়ে এসেছি।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, স্থানীয়রা রহিমা আক্তার নামে এক মহিলাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলে আমরা প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছি। তার বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে অভিযোগ ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।