নেত্রকোণায় টানা ভারী বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে ১১হাজার ৮৮২ হেক্টর জমির ধান
নেজা ডেস্ক রিপোর্টঃ
টানা কয়েক দিনের অতিবৃষ্টিপাতে নেত্রকোনার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পানি বাড়ায় জেলার বিস্তীর্ণ নিম্না ল প্লাবিত হয়ে প্রায় ১১ হাজার ৮ শত ৮২ হেক্টর জমির আবাদি আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
নেত্রকোনায় গত তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলেও আজ শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবং পানি দ্রুত নামতে শুরু করায় কৃষি কর্মকর্তারা আশা করছেন, তলিয়ে যাওয়া আমন ধানের চারা পূনরায় পনির উপর ভেসে উঠবে।
মোহনগঞ্জ উপজেলার বিরামপুর গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া জানান, তিনি এ বছর ৪০ কাঠা জমিতে আমন আবাদ করেছেন। এর মধ্যে তিন দিনের বৃষ্টিতে ২০ কাঠা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
আটপাড়া উপজেলার রূপচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক আকিকুর রেজা খোকন জানান, ‘মহাজনের কাছ থেকে টাকা ধার করে এনে জমি লাগাইছি। কপালডাই খারাপ। বৃষ্টির পানিতে জমি তলায়া গেছে’।
কেন্দুয়া উপজেলার আমতলা কোনাপাড়া গ্রামের কৃষক হারুন মিয়া বলেন, কয়দিনের বৃষ্টিতে আমার ২০ কাঠা ক্ষেত তলায়া গেছে।
রোয়াইলবাড়ী গ্রামের জিলু মিয়া বলেন, আমার তিনটা পুকুরের বেশীরভাগ মাছ পানিতে ভাইস্যা গেছে।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণে প্রায় ১১ হাজার ৪ শত ৮২ হেক্টর জমির আবাদি আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে নেত্রকোনা সদরে ২ হাজার ৪৭০ হেক্টর, পূর্বধলায় ২ হাজার ৩৬০ হেক্টর, দুর্গাপুরে ৪৫ হেক্টর, কলমাকান্দায় ১৮০ হেক্টর, মোহনগঞ্জে ১ হাজার ২০০ হেক্টর, বারহাট্টায় ২১৫ হেক্টর, আটপাড়ায় ১ হাজার হেক্টর, মদনে ৫০০ হেক্টর, খালিয়াজুরীতে ১২ হেক্টর ও কেন্দুয়ায় ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। এছাড়াও বৃষ্টিপাতে শীতকালীন শাকসবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্সতি সাধিত হয়েছে। তিনি কৃষকদের এখনই হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, দ্রুত পানি নেমে গেলে আমন ধানের তেমন ক্ষতি হবে না।
নেত্রকোনা জেলা মৎস্য কর্মবর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান কবীর জানান, অতিবৃষ্টিতে জেলার ৭০৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আনুমানিক প্রায় ৮ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সারওয়ার জাহান জানান, শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত উব্দাখালি নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার মাত্র দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে, ধনু নদীর পানি খালিয়াজুড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১.৮০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে, সোমেশ্বরী নদী পানি বিজয়পুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫.২২ সেমি ও দুর্গাপুরে ২.৪০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে ও কংশ নদীর পানি জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২.৩৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।