নেত্রকোণায় নির্বিচারে ধানের চারা গাছ কেটে পুকুর খননের মহোৎসব
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নেত্রকোণায় তিন ফসলি জমিতে রোপণ করা ধানের চারাগাছ কেটে চলছে পুকুর খননের প্রস্তুতি। এতে জমির শ্রেণী পরির্বতন করা হয় যা আইন আইনসম্মত নয়।
রবিবার (৩ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নেত্রকোণা-কেন্দুয়া সড়কের পাশে কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের মোঃ রোমান মিয়ার রোপণ করা বোরো ধানের চারাগাছ (শাইল ধান) কাঁটার মহোৎসব চলছে।
ধানগাছ কাটায় নিয়োজিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, পুকুর খনন ও মাটি বিক্রির জন্য জমির মালিক মো: রোমান মিয়ার নির্দেশে তারা পুরো জমির ধানের চারাগাছ কেঁটে জমিটি পরিস্কার করে দিচ্ছে। পরে এক্সকেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে মাটি কাঁটবে।
কৃষি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন একটি স্থানীয় এনজিও এআরএফবি’র পরিচালক কাওসার খান রনি জানান, অনুমতি ছাড়া জমির শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবেনা এমন আইন থাকলেও তা মানছেন না এমন অনেকেই। ওই মাটি খনন করলে একদিকে যেমন আইন অমান্য করে জমির শ্রেনী পরির্বতন করা হবে,অন্যদিকে নষ্ট হবে জমির টপ সয়েল (মাটির উপরের উর্বর অংশ)।
জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করে অগ্রপথিক স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন, নেত্রকোণা’র পরিবেশ কর্মী শিক্ষানবিশ আইনজীবী শরীফা শহীদ বর্ষা বলেন, বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি কমছে ফসলি/আবাদী জমি। আইন অনুযায়ী ইচ্ছে হলেই কেউ তার নিজ জমির শ্রেণী পরিবর্তন করতে পারবেন না। এ জন্য জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে অনুমতি নেয়ার বিধান রয়েছে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী আবাদী জমি খনন করে শ্রেনী পরির্বতন করা যাবে না।
এব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য জমির মাল মার্চ, বিকেল ৪টা পর্যন্ত) যোগাযোগ করতে চাইলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মাসকা ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা, মোঃ মুজিবুর রহমান জানান , এ ব্যাপারে আমার জানা নাই। আমরা কাউকে এমন অনুমতি নেইনি। তিনি এ বিষয়ে কোন কিছু জানেন না, তবে বিষয়টি তিনি খোঁজখবর নিবেন বলেনও জানান।
নেত্রকোণার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাফিকুজ্জামান জানান, জেলা প্রশাসনের অনুমোদন ক্রমেই মাটির কাটার নিয়ম। কেউ যদি এমন কিছু করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।