নেত্রকোণার ৫৭টি নদ-নদীর মধ্যে কোনমতে প্রবাহিত ১০টি, বাকী গুলো অস্তিত্ব বিলীন
মানব সভ্যতার বিকাশ থেকে শুরু করে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, জীবন-জীবিকা- সব কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এসব নদ-নদী।
দিলওয়ার খানঃ
নেত্রকোনা জেলার ৫৭টির নদ-নদী মধ্যে বর্তমানে প্রবাহিত রয়েছে ১০ টি, বাকী ৪৭ টি নদীর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। পাহাড়, সমতল ভুমি আর হাওড়া অঞ্চল নিয়ে গঠিত এই জেলা। বিভিন্ন উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে অসংখ্য নদ-নদী।
পানি উন্নয়ন বোর্ড এর পরিসংখ্যান থেকে জানাযায়, ছোট-বড় নদ-নদীর সংখ্যা প্রায় ৫৭টি। কিন্তু হাতেগোণা কয়েকটি ছাড়া বাকিগুলোর নাম আমরা অনেকেই জানি না। কালের আবর্তে অনেক নদী আজ হারিয়ে গেছে। আবার অনেক নদী মৃতপ্রায়, শীর্ণকায়। এক সময় যে নদীগুলোর ওপর দিয়ে নৌকা বা লঞ্চ চলতো- সেসব নদীও আজ স্রোতহারা। অথচ, মানব সভ্যতার বিকাশ থেকে শুরু করে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, জীবন-জীবিকা- সব কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এসব নদ-নদী। নেত্রকোনার নদ-নদীগুলোর একটি তালিকা রয়েছে । নতুন প্রজন্মও জানতে পারবে আমাদের নদ-নদীর ইতিহাস। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করছি, নেত্রকোনার নদ-নদী নিয়ে আমি পত্র-পত্রিকায় বহু রিপোর্ট হয়েছে । কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া অনেক নদীর নাম সংগ্রহ করেছি। ওইসব রিপোর্ট থেকে এখানে কিছু নদীর নাম তুলে ধরলাম।
নেত্রকোনার কিছু নদ-নদীঃ
নেত্রকোনা সদরের মগড়া, তেওড়াখালি, ধুপিখালি, লাউয়াড়ি, সুরিয়া, সাইডুলি, ধলাই।
বারহাট্টার কংস, গোলামখালি, কানাই, কাওনাল।
দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী, নিতাই, বাঁকহারা।
কলমাকান্দার গণেশ্বরী, বালিয়া, গুনাই, আত্রাইখালি।
আটপাড়ার সোনাই, বাউরী, ছিলা, তুষাই, বিষনাই।
মদনের বৌলাই, বালই, ছেলা, বলী।
মোহনগঞ্জের সাপমারা, কানসা।
ঠাকুরাকোনার ধনাইখালি, সলি, সলি বুবিজান।
কেন্দুয়ার বেতাই, রাজেশ্বরী, পাতকুড়া, সতি, বারুনী,।
খালিয়াজুরির ধনু, নয়া নদী, পিয়াইন
পূর্বধলার কালীহর, সুতি, বল, সাপার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, মো: সারুয়ার জাহান জানান, বর্তমানে প্রবাহিত নদীর সংখ্যা রয়েছে দশটি। মৃতপ্রায় নদীর সংখ্যা ১৭ টি।
নদী গবেষক ও পরিবেশবিদদের দাবী নেত্রকোনার নদীগুলো চিহ্নিত করে, খননসহ গতিপথ পুনরুদ্ধার করার জন্য কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এক সময়ের নেত্রকোনা অঞ্চল ছিল নদীপথের উপর নির্ভরশীল, ক্রমান্বয়ে হারিয়ে গেছে সব নদী, যেসব নদী আছে সেগুলো অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, কালভার্ট রাস্তা নির্মাণ করায় বিলুপ্তির পথে চলে গেছে। পরিবেশবিদগণ দাবী জানাচ্ছেন ৫৭ টি নদীচিহ্নিত করে নদীগুলো পুনরুদ্ধার ও গতিশীল করার।