
নেত্রকোণা জার্নাল ডেস্কঃ নেত্রকোণা পৌরসভাকে দৃষ্টিনন্দন ও উন্নত নাগরিক সেবা সমৃদ্ধ পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে আগামী পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র হিসেবে প্রার্থীতা করার লক্ষ্যে এলাকার বিভিন্ন পাড়া, মহল্লায় জনসংযোগ করে যাচ্ছেন অপির্তা খানম সুমি।
নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নেত্রকোনা পৌরসভার সাবেক তিনবারের (১৯৮৯-২০০৪) সফল চেয়ারম্যান এবং নেত্রকোনা জেলা পরিষদ এর সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক মোঃ মতিউর রহমান খান ও হোসনে আরা বেগম (গৃহিনী) এর ঘরে ১লা অক্টোবর, ১৯৭৩ সালে জেলা শহরের সাতপাই জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেত্রকোনা জেলা শাখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অর্পিতা খানম সুমি।
পিতা মোঃ মতিউর রহমান খান ১৯৬২ সাল থেকে ছাত্রলীগের সদস্য হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠীত থেকে অদ্যাবধি আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত । ৭৫ পরবর্তী মামলার কারনে দীর্ঘদিন ফেরারী জীবন যাপন করেন, নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত স্বৈরাচার শাসন বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহনকালীন সময়ে একাধিক মামলায় জরিয়ে হয়রানীর স্বীকার হন। ১৯৯১-১৯৯৫, ২০০১-২০০৫ গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে অংশগ্রহন করে বিএনপি- জামাতের রোষানলে পড়েন । ১/১১ এর সময় সেনাবাহিনী কর্তৃক ঘরবাড়ী ঘেরাও করে তাকে গ্রেফতার করে একরাত্র আটকিয়ে রেখে নির্যাতন করেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বিএনপি ও জামাত দেশ ব্যাপী গুপ্ত হামলা চালানোর সময় নেত্রকোনাতে উনার উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে নির্মম ভাবে মাথায় আঘাত করে।
সুমির বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে নিজেকে নিয়ে এসেছেন আজকের অবস্থানে। তিনি ১৯৮৮ সালে ছাত্রলীগের সদস্য পদ লাভ ও নেত্রকোনা সরকারী কলেজ শাখার মহিলা সম্পাদিকার পদ লাভ ও ১৯৯১ সালে নেত্রকোনা সরকারী কলেজের কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে ছাত্রী মিলনায়তন সম্পাদিকা নির্বাচিত হয় এবং ২০১০ সাল হতে যুব মহিলা লীগের সাথে সম্পৃক্ত থেকে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন। ২০১৭ সাল হতে নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন কছেন।
নানা ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করে জীবনের বহু মূল্যবান সম্পদ হারিয়েছেন তিনি। গত ওয়ান ইলেভেনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করার পর মুক্তিলাভ করা পর্যন্ত নেত্রকোনায় ও ঢাকার রাজপথে কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদিকা অধ্যাপিকা অপু উকিলের নেতৃত্বে প্রতিটি মিছিল-মিটিং এ অংশ গ্রহন ও ২০০২ সালে অপারেশন ক্লীন হার্টের সময় প্রথমেই সেনাবাহিনী নেত্রকোনা এসে পরপর দুই তিন দিন তাদের বাড়ী ঘর তছনচ ও ভাংচুর করে তার বাবাকে গ্রেফতার করতে আসলে তার সাথে সেনাবাহিনীর ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে রাইফেলের নল দিয়ে তল পেটে আঘাত করলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় ফলে তল পেটের আঘাতের কারনে তার সন্তান ধারন ক্ষমতাও চিরতরে নষ্ট হয়ে যায় এবং এখনও তিনি নিঃসন্তান।
অন্যদিকে ২০০১ হতে ২০০৫ সাল পর্যন্ত জন নেত্রীর নির্দেশে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে অংশ গ্রহন করে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবরের রোষানলে পড়তে হয় তাকে। ১৯৯১ সালে বিএনপি জামাতের শাসনামলের শুরুতেই নেত্রকোনায় সর্ব প্রথমই তাদের বাড়ীতে হামলার সময় বাবাকে রক্ষা করতে গিয়ে তাদের লাঠির আঘাতে আহত সুমি। ১৯৮৯-৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে, মিছিলে হরতাল পিকেটিং এ অংশগ্রহন ও ১৯৯০ সালে মিছিলে পুলিশের লাঠি চার্জে মাথায় ফেটে যায় এবং গুরুতর আহত হন তিনি। ১৯৮৮ সালে কলেজের প্রথম দিনে ছাত্রদল কর্তৃক ছাত্রলীগের মিছিলে হামলার স্বীকার হয়ে আহত হন।
পারিবারিক জীবনে রাজনীতিতে রয়েছে তার পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তার ছোট দুই ভাইই আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত । ছোট ভাই সোহেল অর রহমান খান নেত্রকোনা সরকারী কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস, ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্মসম্পাদক এবং জেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য ও সাজ্জাদুর রহমান খান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য। দুইজনই একাধিকবার কারা ভোগ করেছে।
অপারেশন ক্লিন হার্টের সময় সাজ্জাদুর রহমান খানকে সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে ও ০৭ মাস কারাগারে আটকে রাখে ও ১/১১ এর প্রথম রাতেই তার বাবাকে গ্রেফতার করে এবং এক রাত আটকিয়ে রেখে নির্যাতন করে ভোর রাতে ছাড়ে এবং ঐ রাতেই ছোট ভাই সোহেল অর রহমান খান শুভ্রকে (সাবেক জিএস) গ্রেফতার করে অমানুষিক নির্যতন করে এবং ২ দিন ক্যাম্পে আটকিয়ে রাখে। অন্যদিকে তার ভাশুর নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য, জেলা যুব লীগের সাবেক সমাজ কল্যান সম্পাদক, নেত্রকোনা পৌরসভার সাবেক ০২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক, স্বামী বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী এবং ছাত্র জীবনে জাতীয় ছাত্রলীগের জেলা কমিটির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ছিলেন ।
সাংগঠনিক ব্যাক্তিত্বের অধিকারী সুমি সামজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনিও রয়েছে প্রশংসনীয় পদচারণা। তিনি শিশুকাল হতে নেত্রকোনা মধুমাছি কচিকাঁচার মেলার সদস্য। নেত্রকোনা রাইফেলস ক্লাব ও রোটারী ক্লাব, নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজ, নেত্রকোনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি, নেত্রকোনা জেলা পাবলিক লাইব্রেরী, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, নেত্রকোনা, উদীচী শিল্পগোষ্ঠী,নেত্রকোনা, ডায়াবেটিক সমিতি, নেত্রকোনা, নেত্রকোনা চক্ষু হাসপাতাল, ঢাকাস্থ নেত্রকোনা জেলা সমিতি, ঢাকাস্থ বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতি, ঢাকাস্থ বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম, ঢাকাস্থ ময়মনসিংহ বিভাগ উন্নয়ন সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন সংস্থার সদস্য ও আজীবন সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন।
শিক্ষা জীবনে অর্পিতা ১৯৮৮ সালে নেত্রকোনা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় হতে এসএসসি ও ১৯৯০ সালে নেত্রকোনা সরকারী কলেজ হতে এইচ এস সি এবং ১৯৯২ সালে স্নাতক ও ১৯৯৫ সালে ইংরেজী সাহিত্যে আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করে ২০০০ সাল হতে ২০০২ পর্যন্ত নেত্রকোনায় প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু কলেজে ইংরেজী বিভাগে অবৈতনকি শিক্ষক হিসেবে কর্ম জীবন শুরু। ২০০৫ হতে ২০১০ পর্যন্ত ইমিগ্রেশন কনসালটেনসি ফার্ম (সিএম) ইন্টারন্যাশনাল, ফস্টার ও অর্নেড গ্রুপ এ ব্যবস্থাপক হিসাবে কাজ করেন তিনি। এবং ২০১০ সাল হতে অদ্যাবধি ইমিগ্রেশান কনসাল্টেন্ট হিসাবে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন।
সুমি পৌরবাসীর সূখ-দুঃখের সাথী হয়ে নেত্রকোণা পৌরসভাকে একটি আধুনিক ও নান্দনিক মডেল পৌরসভা হিসেবে উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি তার এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পৌরবাসীসহ সকলের সহযােগীতা ও দোয়া কামনা করে বলেন, সুমি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে জননেত্রী শেখ হাসিনার ছায়াতলে থেকে আজন্ম বঙ্গবন্ধুর লালীত স্বপ্ন সোনার বাংলা গঠন ও বঙ্গকন্যার উন্নত সমৃদ্ধ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে নিজিকে সদা উৎসর্গ করাই আমার জীবনের একমাত্র ব্রত। সর্বোপরী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাগড়ার লক্ষ্যে ও জননেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের গতিধারা আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে নেত্রকোণা পৌরসভার সকল মানুষকে সাথে নিয়ে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত, নারী ও শিশুর সার্বিক নিরাপত্তা ও অবাধ চলাফেরা নিশ্চিত করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরন হিসেবে বাংলাদেশের মধ্যে একটি অন্যতম আধুনিক পৌরসভা বিনির্মাণ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
তার প্রতিশ্রুতিতে তিনি বলেন, পৌরসভার আওতাধীন রাস্তা, ড্রেন, হাটবাজার, সড়ক বাতি, কবরস্থান জনসংখ্যা অনুযায়ী অপ্রতুল, জনসেবা যুগোপযোগী নয় এবং অনেকেই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই নেত্রকোণা পৌরসভাকে একটি আধুনিক, নান্দনিক, উন্নত এবং ডিজিটাল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলতে চাই।