
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রনাধীন সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে জেলায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় দরিদ্র এতিম অসহায় শিশুদের লালন পালনের একমাত্র প্রতিষ্ঠান সরকারি শিশু পরিবার (বালক) নেত্রকোণা।
দেশব্যাপী পরিচালিত ৮৫ টি সরকারি শিশু পরিবারের মধ্যে এটি একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৭৩ সালে জেলা শহরের নিজামপুর এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০১ সালের ০৫ ই মে সরকারি শিশু পরিবারে রুপান্তরিত হয়ে সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের কুমড়ী এলাকায় স্থাপিত হয়।
৩ একর জায়গার মনোরম পরিবেশের এই প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ১০০ জন এতিম অসহায় শিশুর জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় খাবার, পোশাক পরিচ্ছদ, চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
প্রতিষ্ঠানের উপতত্ত্বাবধায়ক তারেক হোসেন জানান, শিশুদেরর সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠার জন্য খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সুযোগ সুবিধা রয়েছে। মনোসামাজিক উন্নয়নের জন্য নিয়মিত কাউন্সিলিং ও সেজন্য একটা কাউন্সিলিং সেন্টারও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ছোট বেলা থেকেই বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধু কে জানার জন্য “বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ” কর্ণার স্থাপন করা হয়েছে। নিয়মিত পত্রিকা পড়া, বসে শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলাপ করার জন্য “অপেক্ষালয়” তৈরি করা হয়েছে। বিনোদনের জন্য আনন্দ চত্বর নির্মান করা হয়েছে। খেলার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দক্ষ জন শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে উন্মুক্ত মঞ্চ এবং দৃষ্টিনন্দন “হলরুম”। শিশুদের মনে যেন সুন্দর প্রভাব পরে সেজন্য তাদের থাকার এবং ডাইনিং রুম গুলোর সৌন্দর্য বর্ধন করে দৃষ্টি নন্দন করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি শিশুদের ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষা অর্জনের জন্য আরবি শিক্ষাও প্রদান করা হয়ে থাকে।এক অন্য রকম পরিবর্তনের ছোয়া সরকারি শিশু পরিবার নেত্রকোনা।
প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে গিয়ে শিশুদের দেখে এবং তাদের সাথে কথা বলে মনে হলো সত্যিই এক পারিবারিক আদর যত্নে তারা বেড়ে উঠছে। শিশুরাও তাদের প্রতিষ্ঠানের বর্তমানে সবক্ষেত্রেই পরিবর্তনের গল্প শোনালো।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আলাল উদ্দিন জানান, সরকারি শিশু পরিবার (বালক) নেত্রকোনা প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার স্বাভিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সবাইকে নিয়ে। তিনি আরও জানান, সরকারি অর্থে লালিত পালিত শিশুরা যেন সত্যিকারের মানুষ হয়ে দেশের সম্পদে পরিণত হতে পারে সেটাই আমাদের কামনা। তিনি আরো বলেন জনবল সংকট, গ্যাসের সংযোগ স্থাপন এবং প্রতিষ্ঠানের শিশুদের যাতায়াতের জন্য একটি যানবাহনের ব্যবস্থা অতি জরুরি প্রয়োজন। এছাড়াও শিশুদের স্কুল কলজের যাওয়া জন্য পরিবহন সংকটের কথা জানান।
দিলওয়ার খান, সিনিয়র সাংবাদিক।
নেত্রকোণা
২৫/০৮/২০২০ইং