প্রতিপক্ষের ভয়ে মাদ্রাসায় যাচ্ছেন না শিক্ষক, অনুষ্ঠিত হয়নি ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন

প্রকাশিত: ৪:২০ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২৪

মজিবুর রহমান:
নতুন কারিকুলাামে এক যোগে সারাদেশের ন্যায় নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে সকল স্কুল ও মাদ্রাসায় আজ বুধবার (৩ জুলাই) প্রথম দিনের ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন-২০২৪ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও মনকান্দা এম.ইউ.আলিম মাদ্রাসা এন্ড বি.এম কলেজের মাদ্রাসার দাখিল শাখার ৬ষ্ট, সপ্তম,অস্টম ও নবম শ্রেনির এই মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। কতিপয় শিক্ষক-এলাকাবাসী জোট ও অধ্যক্ষের মধ্যে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরেই এই মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

সুত্র জানায়, সম্প্রতি অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষের সঙ্গে মাদ্রাসার কতিপয় শিক্ষক কর্মচারীদেও সাথে জোট হয়ে দ্বন্দ্বে জড়ায় এলাকাবাসী। এরই জেরে গত ১১ জুন অধ্যক্ষ পন্থী শিক্ষকদের ওপর হামলাসহ অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ কতিপয় শিক্ষক-এলাকাবাসী জোট।

এরপর থেকে ভয়ে অধ্যক্ষ পন্থী কোন শিক্ষক-কর্মচারীরা মাদ্রাসায় যাওয় থেকে বিরত রয়েছেন। যার ফলে অদ্যাবধি মাদ্রাসায় তালা ঝুলছে। মাদ্রাসায় তালা লাগানোর ঘটনা ২৩ দিন অতিবাহিত হলেও স্থানীয় প্রশাসন কিংবা স্থানীয়ভাবে কেউ তালা খোলার ব্যাপারে এগিয়ে আসছেন। যেকারণে মাদ্রাসায় পাঠদানসহ ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এদিকে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা না হওয়ায় অভিবাবক মহলে ক্ষোভ বাড়ছে।

স্থানীয় জানান, দুইপক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে মাদ্রাসাাটি আজ অচল হওয়ার পথে। বছরের শুরু থেকে দুই বার মাদ্রাসায় তালা লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। ঠিক মত ক্লাশও হয়নি, এখন মূল্যায়ন পরীক্ষা হচ্ছে না। তাদের দুইপক্ষের স্বার্থের রোষানলে পড়ে আমাদের কোমলমতি ছেলেমেয়েদের জীবন নষ্ট হচ্ছে। এই দ্বন্দ্ব দ্রুত সমাধান চান তারা।
এব্যাপারের মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ.এম.এম.মুহিব্বুল্লাহ জানান,কতিপয় শিক্ষকের উসকানিতে তাদের সাথে গ্রামে কিছু মানুষ জোট বেঁধে আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। গত জানুয়ারি মাসে আমার ওপর হামলা করে তারা। এই উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি ও তাদের মারমুখী আচারণের কারণে আমি মাদ্রাসায় না গেলেও উপাধ্যক্ষেও নেতৃত্বে মাদ্রারসার পাঠদানসহ সকল কার্যক্রম চলছি। এরইমধ্যে গত ১১ জুন শিক্ষকদের মারপিটসহ মাদ্রাসার অফিস কক্ষসহ ক্লাশরুম ও মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় তারা। যেকারণে ভয়ে কেউ মাদ্রাসায় যাচ্ছেন না। আর মাদ্রাসা যেহেতু যেতে পারি না তাহলে এই পরীক্ষা নেব কিভাবে?। পরীক্ষা নেওয়ার জন্য অন্য জায়গায় ভ্যাণুু খোঁজ করছি। উপযুক্ত জায়গা পেলে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নেবেন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ১১ জুনের ঘটনার পর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে আন্দোলনে থাকা মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ও মনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা নাজিম পারভেজ জানান, অধ্যক্ষ অন্যায়ভাবে ৬ জন শিক্ষকের বেতনভাতা বন্ধ করে রেখেছেন। মাদ্রাসা শিক্ষকদের হাজিরা খাতা থাকে অধ্যক্ষের বাসায়। যেকারণে ওই ৬ শিক্ষক কর্মচারী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারেন না। তার অনিয়ম দুর্নীতি কারনে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। কয়েকজন শিক্ষকের ওপর অবিচার কার্যক্রমের প্রতিবাদে শুধুমাত্র অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তারা দুইজনই। কিন্তু অন্য তালা গুলো অধ্যক্ষ তার নিজের লোক দিয়ে লাগিয়েছেন বলে দাবী করেন তারা।

এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।