বিধবা মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় বাবার গোয়ালঘরে আগুন
জাকির আহমেদঃ
নেত্রকোনার মদন উপজেলায় এক বিধবা নারী বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে তার বাবার গোয়ালঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে, উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের খাগুরিয়া গ্রামে। এর আগেই লাকী আক্তার নামের ওই বিধবা নারী নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ২১ এপ্রিল একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বারহাট্টা উপজেলার দেশীউড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের স্ত্রী লাকী আক্তার। ২০১৭ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর তিন সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন তিনি। ঢাকার মাস্টারবাড়ি এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে কাজ করে সন্তানদের বড় করে তুলছেন। ইতোমধ্যে বড় মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন।
গার্মেন্টস চাকরির সুবাদে লাকী আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হয় আটপাড়া উপজেলার আড়াগাঁও গ্রামের মৃত মনফর আলীর ছেলে সিএনজি চালক আব্দুল খালেকের। সেই পরিচয় থেকেই খালেক বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বিভিন্নভাবে লাকী আক্তারকে হয়রানি করে আসছিলেন। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় খালেক একাধিকবার হুমকি দিয়ে বলেন, তার বাবার বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেবেন। এমন একটি ভয়ভীতি মূলক অডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
গত সোমবার গভীর রাতে লাকী আক্তারের বাবার বাড়ির গোয়ালঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় খালেক—এমনই অভিযোগ মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে একটি বাচ্চা গরুসহ তিনটি গরু মারা যায় এবং আরও দুটি গুরুতরভাবে দগ্ধ হয়। প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
লাকী আক্তারের চাচাতো ভাই রতন মিয়া জানান, “আমার বোনের স্বামী মারা গেছে ২০১৭ সালে। সে তিন সন্তানের মা। গার্মেন্টসে চাকরি করে সন্তানদের মানুষ করছে। খালেক তার পরিচিত ছিল এবং বিভিন্ন সময় বিয়ের জন্য চাপ দিত। হুমকির বিষয়টি মোবাইলে রেকর্ড করে রাখা আছে। আমার চাচার প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
মদন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, “খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযুক্ত খালেকের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।