"বিরহী কবি মাজেদুল হক "
কবি মাজেদুল হক, পূর্ণ নাম- শেখ মোহাম্মদ মাজেদুল হক বা এস এম মাজেদুল হক ওরফে মাজেদ, সাহিত্যাঙ্গণে সু-পরিচিত নাম- মাজেদুল হক ; " বিরহী কবি " হিসেবে তিনি সমধিক খ্যাত ও সমাদৃত।
বিরহী কবি মাজেদুল হক বৃহত্তর ময়মনসিংহের নেত্রকোণা জেলার সদর উপজেলাধীন ১১নং কে গাতি ইউনিয়নের পাটলী গ্রামে ৩ জুলাই (১৯ আষাঢ়) ১৯৭৭ ইং সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
পিতা- এস এম কিতাব আলী, মাতা - বেগম আয়েশা খাতুন। কিশোর বয়স থেকে কবির লেখালেখির হাতেখড়ি। কবি মাজেদুল হক, কবিতা, ছড়া, গান,প্রবন্ধ, গল্প, নাটক ও উপন্যাস লিখছেন। বি,এ অধ্যয়নরত অবস্থায় তাঁর লেখা প্রথম পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। এখনো নিয়মিত বিভিন্ন ম্যাগাজিনে, স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে।
পেশায় তিনি প্রাণীসম্পদ ( লাইভস্টক ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর) অধিদপ্তরে কর্মরত। পেশাগত ব্যস্ততা সত্যেও তিনি লিখছেন সময় সুযোগে। কবির কবিতা পেয়েছে পাঠক প্রিয়তা তাই প্রতি বছর স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কবির কবিতা ও ছড়া আবৃত্তি করে অর্জন করছে বার্ষিক পুরষ্কার।
প্রকাশিত গ্রন্থ- ১। চোখের জলে নদী ২। কাব্য বলাকা ৩। স্বদেশের মায়া ৪। স্বপ্ন দিগন্ত ৫। ফুলঝুড়ি ৬। নেত্র চয়ন ৭। নির্বাচিত একশো কবিতা ৮। বৃহত্তর ময়মনসিংহের কবিতা ৯। বিজয়ের ছড়া ১০। হাজার কবির কবিতা ১১। বাংলাদেশের নবীন প্রবীণ ১৫০ ছড়াকার ১২। আধুনিক বাংলা লেখক অভিধান।
শিগগিরই প্রকাশিত হবে কবির ছড়ার গ্রন্থ - যাদুর কাঠি, কাব্যগ্রন্থ - কষ্টের পাহাড়, উপন্যাস- ভালো লাগে তোমাকেই, নাটক- অসহায়ের আর্তনাদ।
" চোখের জলে নদী " কবির প্রথম একক কাব্য গ্রন্থ। চোখের জলে নদী কাব্যগ্রন্থের ভূমিকায়,
কবি ও লেখক অধ্যাপক ননী গোপাল সরকার লিখেছেন -
"সাধক প্রাণে নীরব সযতনে যদি কষ্টের প্রকাশ,
তবে তো তিনিই - 'বিরহী কবি' - জগত প্রকাশ।"
চোখের জলে নদী কাব্যগ্রন্থের পাঠপ্রতিক্রিয়ায়,কবি ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক তিতাস আহমেদ লিখেছেন -
কবি মাজেদুল হকের কবিতাই প্রমাণ করে তিনি প্রকৃত বিরহী কবি।
কবি ও সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম অসীম লিখেছেন-
" বাংলা সাহিত্যে যাহার আগমন সার্থক,
তিনি হলেন বিরহী কবি মাজেদুল হক।"
আন্তর্জাতিক সংগঠন "কলম একাডেমি লন্ডন"এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, কবি ও লেখক, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী তাঁর পরিচালিত কলম টিভিতে (১২-১১-২০২২ইং)এক সাহিত্য আলোচনায় কবি মাজেদুল হক কে " বিরহী কবি " উপাধিতে ভূষিত করেন এবং বলেন- "বিরহী কবি মাজেদুল হক " বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র যার লেখায় সাহিত্য হবে সমৃদ্ধশালী।
অতি সংক্ষেপে কবির সাহিত্য বিবরণঃ-
কবিতা-
" অপহরণ "
মনের মিলন ছিল দু'জনের মাঝে,
মিলেমিশে চলিতাম খেলাধুলা কাজে;
আমায় দেখিত যদি
বলিত দরদী-
তোমায় দেখিলে আমি আনন্দে বিভোর,
মনের গহীনে বাঁশি বাজে সুমধুর।
হাসি মুখে কাছে এসে দু'হাত বাড়িয়ে,
বুকের সাথে আমায় ধরিত জড়িয়ে ;
বিনয় করি তোমায়
ভুলোনা আমায়-
তোমাকে না ফেলে আমি কিন্তু মরে যাবো,
জানিনা আমায় নিয়ে তুমি কিযে ভাবো।
তাহার মাথায় রেখে আমার দু'হাত,
কসম দিয়েছে মোরে থাকিতে হায়াত;
হয়তো ঝড় উঠিবে
কত কি বলিবে-
ছাড়িয়া যাবে না মোরে দু'টি পায়ে ধরি,
তোমার জীবন সাথী হয়ে যেন মরি।
গোপনে অভিভাবক শাসন করিল,
ষড়যন্ত্র করে তাকে নির্বাসন দিল ;
শুনিয়া বিবেকে বাঁধে
এখনো সে কাঁদে-
অধ্যয়নরত আমি তখন ছিলাম,
পরিস্থিতির কারণে কষ্টই পেলাম।
বিধির কিযে বিধান পারি না বুঝিতে,
প্রিয়জন কেড়ে নিল কঠোর নীতিতে;
ব্যথার দু'টি পাহাড়
শুধু হাহাকার-
সে কাঁদে আমিও কাঁদি ব্যথিত দু'জন,
বিয়ের নামে হয়েছে সে অপহরণ !
" ব্যর্থতা "
সবিনয়ে তুমি সামনে দাঁড়িয়ে,
যুগল আঁখির দৃষ্টি বাড়িয়ে ;
প্রস্তাব দিলে,
ক্ষতি কি তোমার সাথী করে নিলে ?
নিরুপায় আমি উত্তর দিতে,
আশায় ছিলাম সাথী করে নিতে;
ভয় ছিল তবু,
শপথ রাখিতে না পারিলে কভু।
দিবানিশি তুমি প্রহর গুনিতে,
কি জবাব দেব নীরবে শুনিতে ;
ফেলে আঁখিজল,
সময় সুযোগে বলিতে সকল।
ভরসা ছিল না এতটুকু মনে,
সুদিন আসিবে আলোকিত ক্ষণে ;
বেকার ছিলাম,
প্রেমকে জ্যন্ত কবর দিলাম।
চাকুরিটা পেয়ে আসিলাম ছুটে,
কে যেন তোমায় নিয়ে গেল লুটে ;
বড়লোক স্বামী,
এখন সমাজে লুটেরাই দামী।
ব্যর্থতা এটা বলিনি ভাষায়,
কিছুদিন তুমি থাকিও আশায় ;
লুকোচুরি খেলা,
না পেয়ে আমায় তুমি চলে গেলা।
" বৃদ্ধাশ্রম "
আধুনিক ছেলে-মেয়ে সদ্য পরিবারে,
মাতা-পিতাকে পাঠায় দূরে বৃদ্ধাশ্রম ;
সন্তান ছেড়ে মা-বাবা থাকিতে না পারে,
অনেক কষ্টে জীবন করে অতিক্রম।
সন্তান যখন হয়ে গেল মতিভ্রম,
মনে বিষাদ বেদনা শুধু অবিচারে;
নীরবে সহিতে বাধ্য যত পরিক্রম,
অদৃষ্টকে দোষারোপ করে নির্বিচারে।
যে সন্তান মা-বাবাকে অবহেলা করে,
সুখী হতে পারিবে না কোনোদিন ভবে;
সেবা না করিলে ভাগ্যে অভিশাপ রবে।
বৃদ্ধাশ্রম কেনো দিবে যত্নে রেখো ঘরে,
মা-বাবার মোনাজাত যাবে না বিফল,
আশির্বাদ সন্তানের জীবনে সুফল।
" প্রতিবন্ধী "
সমান অধিকার তো সকলের আশা,
সবার ভাগ্যে মিলে না খাঁটি ভালোবাসা।
অনেক সন্তান আছে যারা প্রতিবন্ধী,
আদর সোহাগ পেতে করে কত ফন্দি।
জুটে না তাহার ভাগ্যে প্রাপ্য অধিকার,
তাহারা জন্ম নিয়েছে গর্ভে মা-বাবার।
অবহেলা অনাদর অদৃষ্টে লিখন,
নিরবে সহিছে তাঁরা শত নির্যাতন।
ভাগ্য নির্ধারণ হলো জন্মের ঐ আগে,
অবিচার অত্যাচার পরিপূর্ণ ভাগে।
সকলের মতো ওরা পারে না চলিতে,
জুলুমের প্রতিবাদ পারে না করিতে।
সুন্দর পৃথিবী যেন বিষাদ সাগর,
সবাই আপন তবু ব্যবহারে পর।
খোদার সৃষ্টি জগতে যত ব্যবধান,
সুনজরে দেখো যদি সবাই সমান।
জীবের প্রতি দরদী যে মানুষ ভবে,
পরোকালে নিশ্চই সে মহাসুখে রবে।
অসহায় মানুষকে দয়া যে করিবে,
ধর্মগ্রন্থে লিখা আছে জান্নাত নছিবে।
" ঠিকানা "
সেদিন দেখেছি ঝলোমলে রহিমের বাড়ি,
লোকে বলিত রহিম সাব ছিল জমিদারি।
তিনি যত্নে গড়া অট্রালিকা রেখে গেল ভবে,
তোমার আমার সকলের চলে যেতে হবে।
অট্রালিকা সন্তানের নামে হল পরিচিত,
রহিম সাবের পরিচয় গেল নির্বাসিত।
রহিমের বাড়ি বলে নাতো মানুষে এখন,
বাড়ি আছে পরিপূর্ণ তবু রহিম গোপন।
বাড়ির পাশে কবর দেখো মাঠির বিছানা,
রহিমের এখন সেটাই আসল ঠিকানা।
যত সম্পদ ছিল সবই অন্যের দখলে,
খালি হাতে রহিম গেলেন পরোপারে চলে।
সময় থাকিতে করো সবে নিজের কামাই,
ধর্মের বিধান মেনে চলা অর্চনা এটাই।
মানুষকে ঠকিয়ে যে গড়ে অর্থের পাহাড়,
পরিণামে পরোকালে হবে কঠিন বিচার।
এখানে একেক টি কবিতা একেক টি ছন্দ কাঠামো অবলম্বনে লিখিত, কবি মাজেদুল হক প্রথাগত ছন্দের নির্ধারিত নিয়ম নীতি ঠিক রেখে তৈরি করেছেন অনেক নতুন বা নব ছন্দরীতি, তিনি তাঁর কবিতায় সেই বিষয় টি নিপুণ ভাবে বর্ণনা দিয়েছেন।
" ছন্দরীতি "
আগে তুমি শিখে লও প্রথাগত নীতি,
পরে কবি সৃষ্টি করো নব ছন্দরীতি।
স্বরবৃত্ত মাত্রাবৃত্ত অক্ষরবৃত্তটি,
লিখিবে শুদ্ধ কবিতা না করিবে ত্রুটি।
মুক্তক অতি মুক্তক অমিত্রাক্ষর কি ?
গৈরিশ ও গদ্যছন্দ মাত্রা বুঝে লিখি।
অমিল সমিল সবি অন্তমিলে খুঁজে,
মাত্রা হিসেব করিয়া নিতে হবে বুঝে।
ছন্দের নিয়মে আছে খুঁটিনাটি যত,
ব্যাকরণ জেনে বুঝে করিবে আয়ত্ত।
না বুঝে করিলে কিছু ফলাফল মন্দ,
কবিতায় প্রয়োজন শিল্পগুণে ছন্দ।
ছন্দরীতি কবিগণ করে যত সৃষ্টি,
প্রতিভায় যোগ হবে প্রসন্ন সু-দৃষ্টি।
কবি মাজেদুল হক কবিতার এসব নিয়ম নীতি খুবই সুনিপুণ ভাবে বর্ণনা করেছেন তাঁর লিখা প্রবন্ধ- ১। বাংলা ছন্দের রূপরেখা ২। কবিতায় ছন্দের কারুকার্য ৩। নব ছন্দরীতি, ইত্যাদি প্রবন্ধের মাঝে তাই অভিজ্ঞ ছান্দসিক কবিগণ তাকে বলেছেন নব ছন্দরীতি নির্মাতা বা স্বপ্নদ্রষ্টা।
ছড়া-
" আযান "
আযান শোনে চমকে উঠি
সময় হলো তাই,
জলদি গিয়ে ওজু করে
নামাজ পড়ি ভাই।
প্রতি ওয়াক্তে ঐ মসজিদে
আযান শোনা যায়,
মনের মাঝে নবীর প্রেমে
জোয়ার ওঠে তায়।
সুরের ধ্বনি মধুর খনি
আযান সুধাময়,
প্রিয়ার মতো বিনয় করে
ডাকছে মনে হয়।
আযান শোনে পরাণ কাঁদে
ভুল করেছি সব,
নামাজ পড়ে চাইব ক্ষমা
মাফ করে দাও রব।
" পড়তে হবে "
ছুটির দিনে মনের সুখে
চলছে খোকা মাঠে,
বাবার সাথে দিন দুপুরে
ইচ্ছে মতো খাটে।
মাঠের ধূলি খোকার গায়ে
সবই গেলো মেখে,
এখন খোকা কাজের ছেলে
হাসছে বাবা দেখে।
রোদের তাপে ঘামছে খোকা
বাবায় বলে রাখো,
গাছের ছায়া জুড়ায় দেহ
একটু বসে থাকো।
বুঝায় বাবা পড়তে হবে
রাখিস মনে খোকা,
মুর্খ হলে সুযোগ বুঝে
দেয় মানুষে ধোকা।
" টোকাই "
রাত পোহালে সাত সকালে
টোকাই চলে পথে,
খায়নি রাতে উপোস প্রাতে
হাঁটছে কোনোমতে।
কামাই করে খাইবে পরে
টোকায় কতো কিছু,
জীর্ণ গায়ে নগ্ন পায়ে
ঘুরছে উঁচু-নিচু।
পথের পাশে রোজই আসে
দু'চোখ মেলে খুঁজে,
বস্তা লয়ে কষ্ট সয়ে
পেটের ক্ষিদে বুঝে।
রাতেও থাকে পথের বাঁকে
জীবন কাটে দুখে,
টোকাই যত অভাব শত
বিষাদ ভরা বুকে।
" ভূতের বাড়ি "
পুকুর পাড়ে ঝোপের দ্বারে
ঐ যে তেঁতুল গাছে,
রাত নিশিতে পায় দেখিতে
ভূত-প্রেতিনি নাচে।
মনের ভয়ে বউ-ঝি লয়ে
দেয় না এ পথ পারি,
বলছে সবে এটাই তবে
হয়তো ভূতের বাড়ি।
জোয়ান নারী রঙিন শাড়ি
সেদিন গেল পরে,
ভূতের নজর করছে আছর
রয় না এখন ঘরে।
ওঝায় গিয়ে ঝাড়-ফুঁক দিয়ে
বলছে এটা দৃষ্টি,
ডাক্তার বলে টেনশন হলে
হয় মনোরোগ সৃষ্টি।
" গরুর গাড়ি "
গরুর গাড়ি চলছে বাড়ি
খ্যাঁতখ্যাঁত চাকা ঘুরে,
হাঁটছে গরু তাড়ায় অরু
হ্যার্র হাট,হাট হুর্ররে।
গাঁয়ের পথে চলছে রথে
কাঠের দুটি চাকা,
গাড়ির উপর বাঁশের আস্তর
একটু একটু ফাঁকা।
পথের লোকে দেখলো চোখে
যায় পেরিয়ে মাঠ,
অরুণ বলে কথার ছলে
হ্যার্র হ্যাই হাট হাট।
মালের বোজা নয়তো সোজা
ওজন আছে ভাড়ী,
যাইবে দূরে চাকার সুরে
চলছে গরুর গাড়ি।
চলছে গাড়ি গাঁয়ের বাড়ি
থামবে না আর গীতে,
চাবুক নাড়ে চিৎকার মারে
হ্যার্র হাট হাট স্থিতে।
শিশুদের কথা চিন্তা করে তিনি লিখেছেন বেশকিছু ছোট্ট ছড়াঃ-
" চড়াই "
ছোট্ট পাখি চড়াই,
করতে জানে বড়াই।
মনের সুখে উড়ে,
মুক্ত মাঠে ঘুরে।
একটু খানি ঝরেই,
ঠাঁই নিয়েছে ঘরেই।
চালের নিচে বাসা,
খড়কুটোতে খাসা।
ঢুকছে ঘরে উড়োৎ,
যায় বেড়িয়ে ফুঁড়োৎ।
মাসিক " নেত্রের আশা " সাহিত্য পত্রিকা ও দৈনিক " মুক্তির আশা " পত্রিকার যৌথ উদ্যোগে (০৪-১১-২০১৭ইং), " বঙ্গবন্ধু নিবেদিত ছড়া" প্রতিযোগিতায় কবি মাজেদুল হক " শ্রেষ্ঠ ছড়াকার " নির্বাচিত হওয়ায় " বঙ্গবন্ধু নিবেদিত ছড়া বিজয়ী " হিসেবে নেত্রকোণা জেলা প্রেসক্লাবে এক সাহিত্য সমাবেশে দেশের বরেণ্য কবি,সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও গুণিজনদের সামনে জেলা প্রশাসক- ড. মোঃ মুশফিকুর রহমান কবি মাজেদুল হকের হাতে " সম্মাননা স্মারক(ক্রেস্ট) তুলে দেন এবং শিক্ষাবিদ ও বরেণ্য বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক যতীন সরকার কবিকে উত্তরীয় পরিয়ে আশির্বাদ দেন।
বিরহী কবি'র স্বরচিত গানঃ-
আধুনিক গান-
কথা ছিল আমার হয়ে আসবে আমার ঘরে।
এখন তুমি বসত করো অন্য জনের ঘরে।। (ঐ)
প্রিয়জন হলেও আমি এখন তোমার পর
নিজের হাতে সাজিয়েছো অন্য জনের ঘর
শতোবার ডাকিলেও আর তুমি আসবে না আমার বাসরে।। (ঐ)
বিধির বিধান এতই নিধান অদৃষ্টের ফল
তুমি হয়তো সুখে আছো আমার চোখে জল
কি আর হবে তোমায় দোষে এখন দোষী ভাগ্যটারে।। (ঐ)
দেশাত্মবোধক গান-
ও... আমার বাংলা মাগো-
শোনাও মুক্তিযুদ্ধের কাহিনি।
আমরা যারা না দেখেছি বলো মা শোনি।।
যদি একাত্তরে জন্ম হতাম
আমরা সবাই যুদ্ধে যেতাম
গলা টিপে হত্যা করতাম
সেই দালান খুনি।।
কিভাবে দেশ স্বাধীন হল
কে বা কারা যুদ্ধ করল
দেশ বাঁচাতে জীবন দিল
সেই ইতিহাস জানতে চাই বঙ্গ জননী।।
বিনা দোষে নির্বিচারে
মারছে মানুষ হানাদারে
পথ দেখাল রাজাকারে
দেশের শত্রু দালাল বাহিনী।।
রাই বিচ্ছেদী গানঃ-
কে- বলে সই কৃষ্ণ কালো ?
আমার চোখে লাগে যেন
জোসনা রাতে চাঁদের আলো।।
লোকে বলুক যতই কালা
আমার চোখে লাগে ভালা
তাহার গলায় দেব ফুলের মালা
পরের কথায় কি বা হলো।।
লোকে বলুক যতই মন্দ
তাতে আমার হয় আনন্দ
সে আমার প্রেমানন্দ
তাহারে আমি বাসি ভালো।।
মাজেদুল হক বিরহী কবি
চোখে ভাসে তাহার ছবি
শপে দিলাম তাহারে সবি
শ্যাম কালার মন ভালো।।
বিচ্ছেদী গানঃ-
আমি হইতে পারলাম না বন্ধুর মনেরই মতো।
মনের মতো হইলে কি আর অভিমান করিতো।।
আমি রূপে গুণে হইতাম যদি পুর্ণিমারই চাঁদ
আমায় দেখে মিঠাইতো বন্ধু মনেরই স্বাদ
পুর্ণিমা রাতে আমায় চাহিয়া দেখিতো।।
আমি হইতাম যদি মণিমুক্তা জহর ও কাঞ্চন
আমায় আদর করিয়া বন্ধু করিতো চুম্বন
মালা বানাইয়া তাহার গলায় দিতো।।
দেখতে আমি ভালো না রূপ নাই বেশি
আমায় ছেড়ে বন্ধু এখন হইল রে বৈদেশি
কবি মাজেদুল হক তাহারে পাইলে (২)
প্রেমের স্বাদ মিঠাইতো।।
ইসলামি গান -
তোরা কে যাবে আয়,
আমি যাব মক্কা মদিনায়।
জিয়ারত করব গিয়ে নবীর পাক রওজায়।।
সত্যবাণী ইসলাম ধর্ম করিতে প্রচার
কুরাইশ বংশে জন্ম নিলেন নবীজি আমার
পিতা আব্দুল্লাহ মা আমেনার
গর্ভে এলেন দুনিয়ায়।।
বে- দ্বীনের অত্যাচারে নবী মোহাম্মদ
মক্কা থেকে মদিনায় করিল হিজরত
পাইলেন তিনি নবুয়ত
বে-দ্বীনেরা করল আঘাত নবীর গায়।।
বলে কবি মাজেদুল হক
মোরাকাবায় ধ্যানে সাধক
দেখতে পাবে নূরের ঝলক
দিদার পাবে ফানা ফিল্লায়।।
বিরহী কবির স্বরচিত গান এখন বিভিন্ন শিল্পীর কন্ঠে শুনা যায়, আশা করা যায় অচিরেই বেতার ও বিটিভির তালিকা ভুক্ত গীতিকার হবেন এবং " মাজেদুল গীতি " নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবে।
অজপাড়াগাঁয়ে জন্ম নিয়ে, শত ব্যস্ততায় জীবন চালিয়েও কবি মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখে যাচ্ছেন প্রকৃতির রূপ রসে পরিপূর্ণ সাহিত্যের অমিয় বাণী, সৃষ্টি করছেন কাব্য সুধা।
সম্পাদক ও প্রকাশক- মুহা. জহিরুল ইসলাম অসীম
অস্থায়ী কার্যালয় : এআরএফবি ভবন, নেত্রকোণা - ময়মনসিংহ রোড, সাকুয়া বাজার মোড়, নেত্রকোণা সদর, নেত্রকোণা-২৪০০। ফোনঃ ০১৭৩৫-০৭৪ ৬০৪, বিজ্ঞাপন: ০১৬৪৫-৮৮ ৪০ ৫০, ই-মেইল: netrokonajournal@gmail.com
সম্পাদক কর্তৃক এআরএফবি ভবন, ময়মনসিংহ রোড, সাকুয়া বাজার, নেত্রকোণা সদর, নেত্রকোণা থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত..... [সর্বাধিক পঠিত নেত্রকোণার একটি আঞ্চলিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম]