ব্যানার-ফেস্টুনে সয়লাভ পূর্বধলা : হুমকির মুখে গাছগুলো

গাছে পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয়, তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় পঁচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। একসময় গাছটি মরে যায়।

প্রকাশিত: ২:৪২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০২৩

পূর্বধলা সংবাদদাতা:
নেত্রকোণার পূর্বধলায় সড়ক-মহাসড়কের পাশের গাছে গাছে পেরেক ঠুকে লাগানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন। এতে সড়কের গাছগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মরে গেছে অনেক গাছ।

গাছে নির্বিচারে পেরেক লাগানোর কারণে সড়কের শতাধিক গাছ মরে গেছে। গাছে পেরেক মারা বন্ধ না হলে গাছগুলোও মরে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।

গাছে পেরেক ঠুকে সাইনবোর্ড না লাগানোর বিষয়ে ২০০২ সালে আইন পাস হলেও সেই আইন প্রয়োগ হচ্ছে না।
সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের সম্মুখে, পূর্বধলা বাজার, স্টেশন মোড়, স্টেশন প্লাটফম, সরকারি কলেজ রোড, রেলস্টেশন সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের পাশের গাছে গাছে ঝুলছে রাজনৈতিক ব্যানার, ফেস্টুন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রচারণার অসংখ্য সাইনবোর্ড। ফেস্টুনগুলো পেরেক দিয়ে গাছে আটকানো হয়েছে।

এসবের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চিকিৎসক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ফেস্টুন। পিছিয়ে নেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং সেন্টারগুলোর বিজ্ঞাপন।

স্থানীয়রা জানায়, রাজনীতি এখন আর মানুষের মধ্যে নেই, তা গাছের ডালে চলে গেছে। সব গাছেই রাজনীতিবিদদের সাইনবোর্ড দেখা যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে তেমন পরিচিতি নেই, কিন্তু গাছের সাথে ঠিকই ঝুলছেন তারা। যেহেতু আইন আছে, সেহেতু এসব সাইনবোর্ড প্রশাসন তুলে ফেলার নির্দেশ দিতে পারে।

পূর্বধলা পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সুজন বলেন, গাছে পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয়, তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় পঁচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। একসময় গাছটি মরে যায়।

পূর্বধলা স্টেশনের বুকিং সহকারী আব্দুল মোমেন বলেন, স্টেশনের অনেক বয়ঃজৈষ্ঠ্য গাছগুলোতে পেরেক দিয়ে গাছে গাছে ব্যানার লাগানো হয়েছে। এতে করে গাছগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যত্রতত্র ব্যানার পোস্টার সাঁটানোর কারণে স্টেশনের স্বাভাবিক সৌন্দর্যও হারিয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, প্রাণিকুলের বেঁচে থাকার জন্য প্রধান উপাদান গাছ। এই গাছের যে প্রাণ আছে, অনুভূতিশক্তি আছে, তা প্রমাণিত। তবে গাছের বাকশক্তি নেই। গাছ সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে আমাদের জীবন বাঁচিয়ে রাখছে। উপকারের প্রতিদান হিসেবে গাছে পেরেক মেরে মানুষ তার প্রতিদান দিচ্ছে। আমাদের বিবেককে জাগ্রত করা দরকার। গাছে পেরেক ঠুকে সাইনবোর্ড-বিজ্ঞাপন লাগানো দন্ডনীয় অপরাধ। গাছে পেরেক মেরে বিজ্ঞাপন টাঙানো বন্ধে প্রাথমিকভাবে জানানো হবে। পরবর্তীতে আইনী প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে।