ভাঙ্গারী মাল কেনার নামে বাসায় ঢুকে চুরি : চক্রের দুই নারী সদস্য আটক

প্রকাশিত: ৩:৩২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০২৩

নেজা ডেস্ক রিপোর্টঃ
নেত্রকোণায় পুরনো ভাঙ্গারী মালামাল সংগ্রহের নামে বাসা-বাড়িতে ঢুকে অভিনব কায়দায় চুরি করতে গিয়ে চোর চক্রের দুর্ধর্ষ দুই মহিলা সদস্যকে আটক করেছে নেত্রকোণা সদর মডেল থানা পুলিশ।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) ভোর রাতে নেত্রকোণা পৌরসভাধীন জয়নগর সিভিল সার্জন অফিস সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে চুরি করার প্রস্তুতির সময় তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, সদর উপজেলার আমলী কেশবপুর গ্রামের মামুন মিয়ার স্ত্রী নার্গিস আক্তার পাখি (২৩) ও এমদাদুল হকের স্ত্রী তানজিলা আক্তার (২২)।

নেত্রকোণা জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণা পৌর এলাকার নাগড়া সাহাপাড়া এলাকায় মিতালী দে (৪৬) নামের এক বিধবা বাস করেন। তার স্বামী-মৃত পল্লব ধর। স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই কন্যা সন্তান নিয়ে সংসার সামলানো ছিল তার বড় দায়িত্ব। কিন্তু আর্থিক সংকট ছিল বড় বাঁধা। আর এই সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য বেঁচে নেন কাপড়ের ব্যবসা। সামান্য পুঁজি নিয়ে বাসায় বসে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করলে আস্তে আস্তে সংসারে ফিরে আসে সচ্ছলতা। এবারের পূজোতেও ছিল রমরমা ব্যবসা। তবে পূজোর জন্য ব্যবসা থেকে সামান্য বিরতি দিয়ে নিজেকে সাময়িকভাবে গুটিয়ে নেন।

সেজন্যই মিতালী দে গত ২২ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করতে দুই মেয়েকে নিয়ে বাসায় তালাবদ্ধ রেখে চলে যান বিভিন্ন মন্দিরে। আর বিকাল ৩:২০ এর দিকে বাসায় ফিরে যা দেখেন তা হয়তো দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। এই সামান্য সময়ে অজ্ঞাতনামা চোরেরা তাহার ঘরের তালা ভেঙ্গে নগদ আড়াই লক্ষ টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। অল্প সময়ের ব্যাবধানে নিঃস্ব হয়ে নেত্রকোণা মডেল থানার দারস্থ হয়ে এই বিষয়ে মিতালী দে একটি লিখিত অভিযোগ (নেত্রকোনা মডেল থানার মামলা নং-৪০, তারিখ-২৬/১০/২৩ইং, ধারা- ৪৫৪/৩৮০ পেনাল কোড) দায়ের করে।

মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর চোরাই মালামাল উদ্ধার, আসামী গ্রেফতার ও ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য এসআই রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম শহরের বিভিন্ন জায়গায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় নেত্রকোনা পৌরসভাধীন জয়নগর সাকিনস্থ সিভিল সার্জন অফিস সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা কালে চুরি করার প্রস্তুতি করাকালীন সময়ে চোর চক্রের এই দুই মহিলা সদস্যদের আটক করেন।

পরে থানায় নারী হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে তারা জানায় যে, তারা বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ভাঙ্গারী সংগ্রহ করে থাকে। তারা ভাঙ্গারী সংগ্রহের নাম করে তারা বাসা-বাড়ির বিভিন্ন খোঁজ খবর নেয়। কোন বাসা তালাবদ্ধ অবস্থায় পেলেই তারা খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে তালা ভেঙ্গে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নিয়ে যায়। তারা একটি বাসায় তালা ভেঙ্গে চুরি করতে সর্বোচ্চ ২০/৩০ মিনিট নেয়। এছাড়াও তারা চুরি করার সময় আরও বিভিন্ন ধরনের অভিনব কায়দা ব্যবহার করে থাকে।

নেত্রকোণা জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান জনান, সিডিএমএস পযালোচনায় আটককৃত দুইজন চোরের বিরুদ্ধে অত্র থানায় ০৪ (চার) টি চুরির মামলাসহ বিভিন্ন থানায় আরও একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। এদের আজ দুপুরের পরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তারা পেশাদার চোর বলে স্থানীয় জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। উক্ত মামলাটির মালামাল উদ্ধার ও আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।