ভাঙ্গা সীমানা প্রাচীর, ১০ বছর ধরে অরক্ষিত মদন খাদ্যগুদাম
জাকির আহমেদঃ
নেত্রকোণার মদন উপজেলা খাদ্যগুদামের ৫শ ফুট সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেছে। নতুন করে প্রাচীর নির্মাণ না করায় ১০ বছর ধরে অরক্ষিত অবস্থায় চলছে খাদ্যগুদামের কার্যক্রম।
গুদাম কর্তৃপক্ষ প্রাচীর নির্মাণের জন্য বার বার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন প্রেরণ করলেও কোন সুরাহা মিলছে না। ফলে গুদাম সংশ্লিষ্টরা আতংক ও ঝুঁকি নিয়েই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
মদন খাদ্যগুদাম ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে মদন উপজেলা খাদ্যগুদামের প্রথম একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। এর আগে গুদামের জায়গা নির্ধারণ করে সীমানা প্রাচীর ও ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্মতার আবাসিক ভবন ও দায়োয়ান সেড নির্মাণ করা হয়।
পরে ২০১০ সালে নির্মিত হয় আরেকটি নতুন ভবন। ভবন দুইটির ধারণ ক্ষমতা হয় ১ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু ১০ বছর আগে গুদামের পূর্ব ও দক্ষিন পাশের প্রায় ৫শ ফুট সীমানা প্রাচীর ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। ভাঙা স্থানে কোন রকম কাঁটাতাড় ও বেড়া না দেওয়া পুরো গুদাম অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। খাদ্য গুদাম সংরক্ষিত হওয়ার কথা থাকলে ভাঙা সীমানা প্রাচীরের কারণে জন সাধারণ অবাধে যাতায়াত করছে। এতে করে গুদামের দায়িত্বরত কর্মকর্তা,কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
অপর দিকে গুদামের জায়গা থেকে জিসি রোডের উচ্চতা বেশী থাকায় পুরো এলাকার পানি খাদ্যগুদামে গড়ায়। কিন্তু গুদামে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বছরে ৬ মাসেই জলাবদ্ধতা লেগেই থাকে। এতে করে গুদামের কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘেœর সৃষ্টি হয়। মালবাহী ট্রাক গুদামে প্রবেশ করায় কাঁদাপানি লেগে থাকে। ফলে ট্রাক থেকে পিচ্ছিল কাঁদার মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকরা মালামাল গুদামে তোলার সময় নিচে পড়ে ধান, চাল,গম নষ্ট হয়ে থাকে।
মদন খাদ্যগুদামে চাল ও গম সরবরাহকারী খায়রুল কবির জানান, ‘গুদামের ভিতরে বেশীর ভাগ সময়েই পানি লেগে থাকে। অবস্থা এতটাই খারাপ যে ট্রাক চালকরা আসতে চায় না। এলেও অতিরিক্ত ভাড়া চায়। বস্তা পানিতে পড়ে গেলে নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় গুদামে মাল বুঝাই ট্রাক নিয়ে গিয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে ঢোকানো যায় না। তখন মাল বুঝাই ট্রাক গুদাম চত্বরে রেখে দেওয়া হয়। কিন্তু গুদামে সীমানা প্রাচীর ভেঙে পড়ায় আমরা দুশ্চিন্তায় থাকি।’
গুদামের শ্রমিক সরদার মোঃ আহাদ আলী বলেন,‘বৃষ্টি হলেই গুদামের সামনে পিছনে পানি জমে যায়। ট্রাক চলাচলের কারণে কাঁদাপানি একাকার হয়ে যায়। পিচ্ছিল কাঁদার মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। পা পিছলে গেলে অনেক সময় বস্তা নিয়ে কাঁদার মধ্যে পড়তে হয়। এতে মালামাল নষ্ট হয়ে যায়।’
অরক্ষিত খাদ্য গুদামের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ হোসেন সারোয়ার জানান, ‘দীর্ঘ ১০ বছর ধরে খাদ্যগুদামের দক্ষিণ ও পূর্ব পাশের প্রায় ৫০০ ফুট বাইন্ডারি দেয়াল ধসে পড়ায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ছাড়া ওসিএলএসডির আবাসিক ভবন ও দারোয়ান সেডটি মেয়াদউর্ত্তীণ হওয়ায় জীবনের ঝুকি নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে।
দেয়াল ও বাসভবন নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর কয়েকবার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু করা হবে বলে আশা করছি। সীমানা প্রাচীর ভাঙা থাকলেও সব সময় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে বলে দাবি কর্মকর্তার।’