মদনে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল অবস্থা: বিদ্যালয়ে উপস্থিত ৩ শিক্ষক, শিক্ষার্থী -১২
জাকির আহমেদঃ
নেত্রকোনার মদনে ৩ শিক্ষক ও ১২ শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপজেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার দিন দিন কমে যাচ্ছে। অপরদিকে শিক্ষকরাও যাচ্ছে না নিয়মিত। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মনিটরিং না থাকার কারণে এমন অবস্থা হয়েছে বলে সচেতন মহল মনে করছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ৯৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ফতেপুর ইউনিয়নের বনতিয়শ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার সরজমিনে গেলে, দুপুর ১টার দিকে দ্বিতীয় শিফটে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পিপুলা আক্তারসহ তিন শিক্ষিকাকে পাওয়া যায়।
এ সময় তৃতীয় শ্রেণীর ৬জন, চতুর্থ শ্রেণির ২ জন এবং ৫ম শ্রেণির ২ জন শিক্ষার্থী ক্লাসে পাওয়া যায়। অপর দিকে দেওসহিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে, ৪ শিক্ষকের মধ্যে ২ জন রয়েছেন ছুটিতে, ২য় শিফটে ৭৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২ জন পাওয়া গেছে। ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শিফটে ১১৭ জনের মধ্যে পাওয়া গেছে ৪২ জন। তবে তিন শিক্ষকের মধ্যে পাওয়া গেছে ২ জন। লাছারকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে ৪ শিক্ষকের মধ্যে ২ শিক্ষকে উপস্থিত পাওয়া যায়।
এখন বৈশাখ মাস,এ সময় আমাদের এলাকায় কাজ থাকে। পরিবারের সদস্যদের সাথে ছাত্ররাও বাড়িতে কাজ করে। তাই শিশুরা ক্লাসে আসতে চায় না। আমি কয়েক বার ছাত্রদের বাড়িতে গিয়েছি। আমরা শিক্ষকরা সবাই আজকে এসেছি। ছাত্র আসছে ২য় সিফটে মাত্র ১২ জন।এভাবেই কথা গুলো বললেন বনতিয়শ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পিপুলা আক্তার।
লাছারকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪ শিক্ষকের মধ্যে দুই জন অনুপস্থিত কেন এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক রেনু মিয়া জানান, একজন শিক্ষক ভোটার তালিকার কাগজপত্র জমা দিতে গেছেন। আরেক জন তার বাচ্চা অসুস্থ ডাক্তার দেখানোর জন্য আমার নিকট হতে ছুটি নিয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদা রুবায়াত জানান, এ উপজেলায় আমি নতুন যোগদান করেছি। এসে দেখলাম যেখানে সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা থাকার কথা তিনজন, আছে মাত্র ১ জন। এই একজন দিয়ে কিভাবে ৯৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মনিটরিং করা সম্ভব? আমি ইতি মধ্যে কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি। তাছাড়া ছাত্র ছাত্রী বিদ্যালয়ে কম আসার আরও একটি কারণ আছে। আপনারা জানেন এই এলাকাটা শুধু মাত্র বোরো ধানের উপর নির্ভরশীল। আর এ সময় ছাত্রছাত্রীরা পরিবারের সদস্যদের সাথে কাজে চলে যায়। কয়েক দিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আপনারা আমাকে সহযোগিতা করুন।