মোহনগঞ্জে এনজিও কর্মকর্তাকে আটকে রেখে মারধর, থানায় অভিযোগ
কামরুল ইসলাম রতনঃ
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ঋণ আদায় করতে গেলে ব্র্যাকের এক কর্মকর্তাকে আটকে রেখে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। আনুমানিক ৪ ঘণ্টা আটকে রাখার পর খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে।
বুধবার দুপুরে মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি ) মো. দেলোয়ার হোসেন সত্যতা করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার উপজেলার মাঘান সিয়াধার ইউনিয়নের মাঘান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই কর্মকর্তার নাম- মো. গোলাম নবী (৩৬)। তিনি মোহনগঞ্জের পানুর এলাকায় অবস্থিত ব্র্যাক এরিয়া অফিসে পিও (কর্মসূচি সংগঠক ) হিসেবে কর্মরত।
আর অভিযুক্ত ব্যক্তি উপজেলার মাঘান গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে মো. মুন্না মিয়া (৩০) ও তার স্ত্রী পপি আক্তার।
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসে মোহনগঞ্জ ব্র্যাক অফিস থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন মুন্না মিয়ার স্ত্রী পপি আক্তার। ওই ঋণের মাসিক কিস্তি পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা। প্রথম তিন মাস নানা তালবাহানা করে কিস্তি পরিশোধ করেন। গত পাঁচ মাস যাবৎ কোন কিস্তি দেননি। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর কিস্তির টাকা আনতে যান ব্র্যাক কর্মকর্তা গোলাম নবী। এসময় অশালীন ভাষায় গালাগাল শুরু করেন মুন্না ও তার স্ত্রী পপি আক্তার। এর প্রতিবাদ করলে মারধর করে গোলাম নবীকে আটকে রাখেন তারা। খবর পেয়ে অন্য ব্র্যাক কর্মকর্তারা থানায় গিয়ে পুলিশ নিয়ে ব্র্যাক কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে। পরে ভুক্তভোগী ব্র্যাক কর্মকর্তা রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী গোলাম নবীর সহকর্মী ইসমাইল হোসেন বলেন, রাতে খবর পাই সহকর্মী গোলাম নবীকে মারধর করে আটকে রেখেছে মুন্না। খবর পেয়ে অফিস থেকে আমরা কয়েকজন মুন্নার বাড়িতে গিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হই। মুন্না হুমকি দিয়ে বলেছে- এই এলাকায় এমন কোন ব্যক্তি নেই যে আমাকে কিছু করতে পারবে। পরে রাত ১১টার দিকে আমরা বিষয়টি থানা পুলিশকে জানাই। দ্রুত পুলিশ গিয়ে গোলাম নবীকে উদ্ধার করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় মুন্না।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মুন্না মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ পাঠিয়ে ওই ব্র্যাক কর্মকর্তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি অবহিত করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা এনজিও বিষয়ক সমন্বয় কমিটির সভাপতি মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, আপনার কাছ থেকেই ঘটনাটি প্রথম জানলাম। এই ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট এনজিও থেকে কেউ আমাকে জানায়নি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলব।