মোহনগঞ্জে বসতঘরে বৃদ্ধের রক্তাক্ত লাশ
কামরুল ইসলাম রতনঃ
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে নিজ ঘর থেকে জাহের উদ্দিন (৭৫) নামে এক বৃদ্ধের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ ও এলাকাবাসীর ধারণা- প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রী ও তার ছেলে মেয়ে মিলে বৃদ্ধ জাহেরকে হত্যা করেছে।
শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার কমলপুর গ্রাম থেকে জাহের উদ্দিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। জাহেরের মাথার কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুরো মেঝে জুড়ে ছিল রক্ত।
প্রতিবেশীরা জানান, জমি বিরোধে চলতি মাসে প্রতিবেশী সনু মিয়া নামে এক যুবককে হত্যা করে জাহের উদ্দিনের ছেলে-মেয়েরা। এ ঘটনায় করা মামলায় জাহেরের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, ছেলের বউসহ আটজনকে আসামি করা হয়। মামলায় দুই ছেলে সাইকুল ও তরিকুল কারাগারে রয়েছে। অপর ছেলে শফীকুল ইসলাম জামিনে আছে। হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে ও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে বৃদ্ধ জাহের উদ্দিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে স্ত্রী ও ছেলে মেয়েরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘরের জিনিসপত্র সরিয়ে নেয়। প্রতিপক্ষের লোকজন আড়াল থেকে পরিকল্পনা শুনে বৃহস্পতিবার থানা পুলিশকে জানায়।
শুক্রবার ভোরে জাহের উদ্দিনের রক্তাক্ত লাশ মিলে ঘরে। শেষ রাতে হত্যার ঘটনা ঘটলেও পাশের ঘরের লোকজন কিছুই জানে না। ঘটনার পর প্রতিবেশীদের ডেকে কোন সহায়তা চায়নি। এমকি হাসপাতালেও নিয়ে যায়নি।
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে একেকবার একেক কথা বলে জাহেরের স্ত্রী আনিছা, মেয়ে আনোয়ারা আক্তার নুপুর ও আজিমা আক্তার। তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
প্রতিবেশী সুজন মিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে জাহের মিয়ার ছেলে-মেয়েরা মিলে কুপিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। তারা আমাদের ফাঁসাতে পরিকল্পনা করছে শুনতে পাই। বিষয়টি পুলিশকে গত বৃহস্পতিবার মৌখিক ভাবে জানাই। এদিন ঘরের জিনিসপত্রও সরিয়ে নেয়।
প্রতিবেশী শাবানা আক্তার ও কাকলি আক্তার বলেন, তাদের পরিবারের প্রত্যেকের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলেই সহজেই অনুমান করা যাবে এই হত্যাকান্ড কে ঘটিয়েছে। গতকাল সবাই বাড়িতে ছিল অথচ পুলিশকে বলছে তারা নাকি খবর শুনে সকালে ঢাকা থেকে এসেছে। কিন্তু ঢাকা থেকে ২-৩ ঘন্টায় তারা আসলো কেমনে? ভোর রাতে কুপিয়েছে বললেও তারা কিন্তু বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। এমকি প্রতিবেশীদের ডেকে কোনরকম সহায়তাও চায়নি।
মোহনগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুজ্জামান সন্ধ্যা ৬টার দিকে বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানানো হয়েছে। হত্যাকান্ডের শিকার জাহেরের স্ত্রী ও মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।