মোহনগঞ্জে রাস্তা আটকে এক পরিবারকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ

প্রকাশিত: ৩:২১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩

কামরুল ইসলাম রতনঃ
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে ঝগড়ার জেরে তিন দিন ধরে চলাচলের রাস্তার বাঁশের বেড়া দিয়ে এক পরিবারের পাঁচ সদস্যকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। এতে পরিবরের শিশু-বৃদ্ধ এমনকি গবাদিপশুও বাড়ি থেকে বের করতে পারছেন না।

উপজেলার বড়কাশিয়া-বিরাপুর ইউনিয়নের কচুয়ারচর (পূর্বপাড়া) গ্রামে মো. শাহীন মিয়ার পরিবারকে এভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।অভিযুক্তরা হলেন, প্রতিবেশী হাইজুল মিয়া, রতন মিয়া ও রিপন মিয়া। সম্পর্কে তার তিন ভাই।

তবে অভিযুক্তরা অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তাদের দাবি- ওই পরিবারের লোকজন বের হওয়ার আরও রাস্তা আছে। না বলে জমি থেকে আইলে মাটি কাটার কারণে রাস্তা আটকেছেন। কোন ঝগড়ার জেরে নয়।

সোমবার সরেজমিন গিয়ে শাহীন মিয়ার বাড়ির সামনে চলাচলের রাস্তা বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে আটকানো দেখা যায়।

ভুক্তভোগী শাহীন মিয়া বলেন, আমার বৃদ্ধ মা, স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবরের পাঁচ সদস্য রয়েছে। দশ বছর যাবত পরিবার নিয়ে এই বাড়িতে বসবাস করি। সামনের জমিটি হাইজুল, রতন ও রিপন তারা তিন ভাইয়ের। পাকা সড়ক পর্যন্ত যেতে তাদের জমির আইল দিয়ে যেতে হয়। কিছুদিন আগে আমার বড় ভাইয়ের সাথে ওই তিন ভাইয়ের ঝগড়া হয়। সেই জেরে গত শুক্রবার সকালে আমার বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা বাঁশ দিয়ে বেড়া দেন তারা তিন ভাই। তারা আমাকে বের হতে দিবেন না। পরিবারের শিশুরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। এদিকে বাড়িতে পাঁচটি গরু রয়েছে। সেগুলো বড়ির বাইরে নেওয়া যাচ্ছে না। তিন দিন ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছি। এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

একই গ্রামের তৈমুর রহমান বলেন, সমাজে এক সাথে থাকতে গেলে সবাই সবার সহযোগীতা করা উচিত। একটা পরিবারকে এভাবে পথ আটকে অবরুদ্ধ করা ঠিক নয়।

পাশের বামেরচর গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথ এভাবে আটকে দেওয়া কোনভাবেই ভালো কাজ হতে পারে না। খেতের আইল এমনিতেই তো সবাই ব্যবহার করে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথ খুলে দেওয়া উচিত।

অভিযুক্ত হাইজুল মিয়া বলেন, শাহীনের পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে বের হতে অন্য আরও দুটি রাস্তা রয়েছে। আমরা অন্য দিক দিয়ে তাদের বের হওয়ার রাস্তা দিয়েছি। আমাদের জায়গা কম কত দিক দিয়ে তাদের রাস্তা দেব। আমাদের না বলে জমি থেকে ওই আইলে মাটি কেটেছিল শাহীন। তাই এলাকার লোকজনের সামনেই রাস্তাটা বেড়া দেওয়া হয়েছে। কোন ঝগড়ার কারণে নয়।

স্থানূয় ওয়ার্ড মেম্বার সোহেল মিয়া বলেন, না বলেই জমি থেকে খেতের আইলে মাটি কেটে ছিল শাহীন। তাই হয়তো এমন ঘটনা হয়েছে। তবে দুই পরিবারের সাথে কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করা হবে।

ইতিমধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অফিসার ইনচার্জ মোহনগঞ্জ থানা বরাবরে পৃথক পৃথক অভিযোগ করা হয়েছে।

বিষয়টি অবহিত করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন বলেন, খবর পেয়ে এসিল্যান্ডকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকেও বলা হয়েছে বিষয়টি দেখার জন্য।