মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের টাকা আত্মসাতের দায়ে সাধারণ সম্পাদক কে বহিষ্কার

প্রকাশিত: ৪:৩৯ অপরাহ্ণ, জুন ১, ২০২৪

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম আজাদ শনিবার বিকালে তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, স্বজন প্রীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর দায়ে নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমেদকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
পাশপাশি আত্মসাতকৃত টাকা ৩০ জুনের মধ্যে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এসময় সভায় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও যায়যায়দিন পত্রিকার মোহনগঞ্জ প্রতিনিধি মাসুম আহমেদ গতকালকের সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতি আবুল কাসেম আজাদ জানান, বিভিন্ন খাত থেকে আসা প্রেসক্লাবের অনুদানের ৫ লাখের বেশি টাকা আত্মসাৎ করেন সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমেদ। যদিও সাধারণ সম্পাদক টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন। সেই সাথে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ভুয়া রেজ্যুলেশন ও গায়েবি বিল ভাউচার তৈরি করে ও তিনি বেহাই পাননি ।

প্রেস ক্লাবের তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত গঠন করা হয়। তদন্তে স্বজন প্রীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত এর বিষয়টি ধরা পড়ে। উক্ত তদন্ত কমিটির আগে বাহিরের লোকজন দিয়ে ৩ সদস্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তারা তদন্ত করতে রাজি ছিলেন। তাদেরকে তদন্ত করার লিখিতভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কয়েকদিন পর রহস্যজনক কারণে তদন্ত করতে অপারগত প্রকাশ করেন।

পরবর্তীতে প্রেসক্লাবের এক বিশেষ সাধারণ সভায় প্রেসক্লাবের সদস্যদের কে দিয়ে ৩ সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটির তদন্তের মাধ্যমে প্রেসক্লাবের টাকা লুটপাটের চিত্র বের হয়ে আসে। উক্ত রিপোর্টের ভিত্তিতেই সাধারণ সম্পাদক কে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ক্লাবের সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অপসারণ ও ক্লাবের সাধারণ সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেই সাথে আত্মসাতকৃত ৫ লাখ টাকার মধ্যে ১ লাখ টাকা মাফ করে দেওয়া হয়। বাকি ৪ লাখ টাকা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রেসক্লাবের একাউন্টে জমা দিতে বলা হয়। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মানিক তালুকদার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মানিক তালুকদার জানান, মাসুম আহমেদ নিজ সংগঠনের টাকা আত্মসাৎ সহ নানা অনিয়ম করে প্রেসক্লাব ও সাংবাদিকদের মান-সম্মান ক্ষুন্ন করেছেন। প্রেস ক্লবের সিদ্ধান্তে সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি অনিয়মের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

বহিষ্কারের বিষয়ে মাসুম আহমেদ বলেন, যড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। বক্তব্য দেওয়ার মতো কিছু নাই। যে অডিট রিপোর্ট হয়েছে তা সত্য নয় এবং তিন বছরের খরচগুলোও ধরা হয় নাই। টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি (মাসুম) বলেন, সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে যেহেতু সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আমার করার কিছু নাই। অপরাগতা থাকলেও সংগঠনের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে।

প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নরোত্তম রায় বলেন, অনিয়ম করে কেউ পার পাবে না। প্রেস ক্লাবের এই সিদ্ধান্ত তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।