মোহনগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন
কামরুল ইসলাম রতনঃ
নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল হোসেন চৌধুরীর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা ।
এ সময় তারা কলেজের নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির বিষয় তুলে ধরে জানায়, কলেজের কম্পিউটার ল্যাব, সাইন্স ল্যাব ও লাইব্রেরি বছর পর বছর তালা লাগানো থাকে । কলেজের কম্পিউটার শিক্ষকের বাসায় নিয়ে গেছেন। কলেজের সরকারি বরাদ্দের সিংহভাগ কোন কাজ না করেই আত্মসাৎ করেন অধ্যক্ষ।
রোববার সকাল ৯টা থেকে কলেজ চত্বরে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মানববন্ধন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। চলে দুপুর দুইটা পর্যন্ত। এতে কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে আহবায়ক মো. শিহাব খানের নেতৃত্বে কলেজ ছাত্রলীগের সদস্যরা।
তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে দ্বাদশ শ্রেণির রোববারের নির্বাচনী পরীক্ষা বন্ধ রাখেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা ব্যাহত হয়।
বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের আশা দেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিজয় কুমার রায়। পরে শিক্ষার্থীরা সমস্যা সমাধানে ১০ দিনের সময় দিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে। আগামী দশ দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধান না হলে তারা আবারও কর্মসূচি ঘোষণ করা হবে বলে জানায়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, কলেজের কম্পিউটার ল্যাবটি সারা বছর তালা দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থীরা ল্যাব ব্যবহার করতে পারে না। ল্যাবের কম্পিউটার-ল্যাপটপ শিক্ষকরা বাসায় নিয়ে গেছেন। তাদের বাচ্চারা এতে গেম খেলে। কলেজে লাইব্রেরি থাকলেও সেটিও তালা লাগানো বছর ধরে। সাইন্স ল্যাবরেটরিতে কোন উপকরণ নেই। এটির অবস্থাও একই রকম। পড়াশোনার যথাযথ পরিবেশ নেই তাই শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট ভীষণ খারাপ হচ্ছে। এছাড়া অধ্যক্ষ নিজেও নিয়মিত কলেজে আসেন না, ভালো মন্দ খোঁজখবর রাখেন না।
শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, কলেজে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান একেবারেই বন্ধ। খেলাধোলার সামগ্রী চাইলে অধ্যক্ষ বলেন-বরাদ্দ নেই। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিষয়ে বরাদ্দের অজুহাত দেন তিনি। জাতীয় কোন প্রোগ্রামে বা আলোচনা সভায় অধ্যক্ষ উপস্থিত থাকেন না। অন্য শিক্ষকরা মিলে যতটুকু পালন করেন তাতে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণের সুযোগ পায় না। বহিরাগতরা কলেজ চত্বরে এসে মাদক সেবন করে শিক্ষার পরিবশে নষ্ট করছে কিন্তু এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অধ্যক্ষের কোন উদ্যোগ নেই। বরাদ্দের টাকা লুটপাটের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল হোসেন চৌধুরীর মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ প্রভাষক বিজয় কুমার রায় বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেক দাবিই যৌক্তিক। শিক্ষকরাও এতে একমত পোষণ করি। অধ্যক্ষ স্যার ছুটি থেকে আসলে আমার তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে এসব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব।