রাজনীতি এবং নেতৃত্বের দৈন্যতা

রাজনীতির সবটুকু এখন প্রকল্প আর অর্থের চাহিদায় ব্র্যাকেট বন্দি হয়ে যাচ্ছে। কর্মীরা প্রকল্পের চাকুরীর মত একজন নেতার পিছনে পাঁচ বছর সর্বোচ্চ ১০ বছরের জন্য অবস্থান নেবে। নেতা নাই প্রকল্পও নাই। এই মতাদর্শে রাজনীতিতে সুস্থ ধারার ভালো কিছু আশা করার কি আদৌ কোন সুযোগ আছে?

প্রকাশিত: ৩:৩২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩

রাজা দেশ পরিচালনা করতো রাজনীতি করে। সেই পুরনো ইতিহাস থেকে তাই জেনে এসেছি। রাজা আর রাজনীতি শব্দ দুটির অবস্থান খুব কাছাকাছি আর পাশাপাশি। যোগ্য, সৎ, নিষ্ঠাবান, অনুসরণীয়, অনুকরণীয়, সকল ধরনের নেতৃত্বের গুণাবলী যার মাঝে বিদ্যমান, কথা ছিল তারাই নেতৃত্ব দেবে আর নেতা হবে।

কিন্তু হতাশায় নিমজ্জিত বর্তমান সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রাজনীতিতে খুব দৈন্যতা অনুধাবন করছি। এই দুই দিন আগে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ করতে দেখেছি। সেখানে হিরো আলমকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আশা করছে এবং তাকেই একমাত্র যোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়েছে।

আমাদের নেতারা স্বাধীন দেশের মানুষকে সব সময় মাথা উঁচু করে চলার কথা বলে থাকেন। আমার প্রশ্ন, হিরো আলম যখন প্রেসিডেন্ট হবে তখন মাথা উঁচু করব না নিচু করব? গভীরভাবে ভাবার সময় হয়েছে।

সাধারণ মানুষের যেখানে একজন নেতাকে অনুসরণ করার কথা ছিল তাহলে এ পর্যায়ে এসে হিরো আলমদের কি অনুসরণ করব? শুনেছি হিরো আলমের নাকি এক কোটি টাকাও আছে। অনুসরণ করব না বর্জন করব?

আমাদের রাজনীতি আর সামাজিক অবস্থান কোন পর্যায়ে এসে পৌঁছে গেছে। নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য হিরো আলমরা কতটা এগিয়ে এসেছে? এই দৈন্যতা চলতে থাকলে সর্বোচ্চ এক যুগ। ভালো মানুষরা রাজনীতি থেকে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

রাজনীতির সবটুকু এখন প্রকল্প আর অর্থের চাহিদায় ব্র্যাকেট বন্দি হয়ে যাচ্ছে। কর্মীরা প্রকল্পের চাকুরীর মত একজন নেতার পিছনে পাঁচ বছর সর্বোচ্চ ১০ বছরের জন্য অবস্থান নেবে। নেতা নাই প্রকল্পও নাই। এই মতাদর্শে রাজনীতিতে সুস্থ ধারার ভালো কিছু আশা করার কি আদৌ কোন সুযোগ আছে?

মোঃ আনোয়ারোল হক রতন
অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত)
পূর্বধলা সরকারি কলেজ
পূর্বধলা, নেত্রকোণা।