সন্তানকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে তাসাউফের শিক্ষা দিতে হবে : হাওলাপুরী পীর

প্রকাশিত: ৮:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২৪

মজিবুর রহমান :
চট্রগ্রামের বোয়ালখালীর আকুদন্ডীর হাওলাপুরী দরবার শরীফের গদীনশীন পীর আলহাজ্ব হযরত শাহ সুফী মাওলানা সৈয়দ নঈমূল কুদ্দুছ আকবরী (মা.জি.আ.) বলেছেন, তাসাউফ চর্চা করার মাধ্যমে মোমিনের হৃদয় বা ক্বালব আলোকিত হয় তাই আপনার সন্তানদের ইলমে তাসাউফের শিক্ষাদানের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

তাসাউফের শিক্ষাদানের মাধ্যম আলোকিত সন্তান গড়ে তোলা সম্ভব হবে। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে নেত্রকোণার কেন্দুয়াস্থ খানকায় হাওলাপুরী দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত শাহ সুফি মাওলানা সৈয়দ আব্দুল কুদ্দুছ (রঃ) সাহেবের পুত্র হযরত শাহ সুফি মাওলানা সৈয়দ শিবলী আকবরি (র:) সাহেবের ৩১ তম ওফাত দিবস আসছে ১১ ডিসেম্বর। ওই দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে “ওরশ প্রস্তুতি” সভায় প্রধান মেহমানের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, হযরত রাসূল (সা:) এঁর পরবর্তীতে সময়ে সূফী পীর মাশায়েখগণ দেশে দেশে দ্বীনি ইলম শিক্ষা তথা ইসলাম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। কোরআন শিক্ষার বিশেষ দাওয়াত তথা তাসাউফ শিক্ষার মিশন নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হিজরত করেছেন। তাঁহাদের আহবানে মানুষ দ্বীনের পথে এসেছেন এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন কুলুষিত আত্মা গুলোকে আলোর পথ দেখিয়েছেন।

পীর সাহেব বলেন, রাসুল (সা:) সময়ে ইসলামে বিভাজন ছিল না। রাসুল (সা:) পর্দা নেওয়ার পর আশারায়ে মোবাশ্বিরাগণ, সাহাবিগণসহ যুগে যুগে ইসলামের খেদমতগণ অত্যাচার ঝুলুমের শিকারসহ হত্যাকান্ড বরণ করতে হয়েছে একশ্রেণী নামধারী মুসলমানদের হাতে। সেই ধারাবাহিতা আজও চলছে এবং আমরা তা ভোগ করে যাচ্ছি।

আশেকান ও মুরিদানদের উদ্দেশ্য করে পীর সাহেব বলেন, যুগ যুগ ধরে আমাদের বিরোধিতা করে যাচ্ছে একদল মানুষ। মানুষকে রাসুল (সা:) প্রতি প্রেম,খোদা তায়ালা’র মূখী ও ইলমে তাসাউফের শিক্ষা প্রচার-প্রসার করতে গিয়ে হামলা ও বাঁধার সৃষ্টি হচ্ছি বহুবার । এরপরেও দ্বীনের দাওয়াত থেমে নেই, যতই বাঁধা আসছে ততই তরিকতের প্রসার ঘটছে। শত প্রতিকুলতা মাঝেও ইমানী চেতনা নিয়ে আপনাদের ঠিকে রাখতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে সুদ-ঘুষ খেলে জিনা-ব্যভিচারী গিবত চর্চা করলে এই নামাজের কোন দাম নেই। লোক দেখানো নামাজ না পড়ে খোদার সান্নিধ্য অর্জন করা যায় আপনেরা সেই নামাজ পড়বেন। হালাল-হারাম চিনে খাবেন। লোভে বশবর্তী হয়ে কখনই অন্যকে ঠকাবেন না, ক্ষতি করবেন না। আল্লাহ’কে কিভাবে রাজিখুশি করা যায় এই বিষয়টি সর্বদায় মাথায় রাখবেন । সবসময় জিকিরের হালতে থাকবেন। আসছে ১১ ডিসেম্বর হুজুর কেবলা বাবাজানের ওরশে সবাই হাজির হওয়ার আহবান রাখেন তিনি। শেষে নবী আদর্শে জীবনগঠন,দেশবাসী জন্য,সমস্তু বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত মুসলিম উম্মাহ’র শান্তি, সুন্নীয়ত তরিকা অকুন্ন্য রাখা, দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুশৃঙ্খল রাখার জন্য সবার ওপর খোদার রহমত বর্ষিত হউক কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন তিনি।

আয়োজিত সমাবেশ নিরাপত্তায় স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রনিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী,গণমাধ্যমকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকসহ সবার প্রতি কৃজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি।

দাইয়েন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া দুলাল, তাড়াইল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম শাহীস, কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মজনু, কবি তানভীর জাহান চৌধুরী, মদনের জুয়েল ফকির, নান্দাইলের শাহজাহান ভূঁইয়া ফকির, এডভোকেট ওয়াজিবুল ফকির, এডভোকেট আব্দুল হাদি ফকির, নওপাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম মাজু ফকির প্রমূখ। সমাবেশে হাজার হাজার আশেকান মুরিদানের মিলনমেলা ঘটে।