দুর্গাপুরে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা

প্রকাশিত: ৫:৪৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৩, ২০২৪

রাজেশ গৌড়ঃ
৩০ চৈত্র ১৪৩০। বাংলা বছরের শেষদিন। বাংলা বছরের শেষ দিন হওয়ায় চৈত্র মাসের শেষ দিনটিকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি। এদিনকে চৈত্র সংক্রান্তি হিসেবে পালন করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে অনুষ্ঠিত হলো চড়ক পূজা ।

প্রতিবছরের মতো এবছরও পৌর শহরের দশভূজা বাড়ি মন্দির চত্বরে শনিবার বিকেলে চড়ক পূজার আয়োজন করা হয়।

এবার দুর্গাপুরের চড়ক পূজার মূল সন্ন্যাসী ছিলেন গোপাল গোস্বামী বজবাসী। সন্ধ্যায় ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় পূজা অনুষ্ঠান।

চড়ক পূজা মূলত শিব ঠাকুরের পূজা। এ পূজায় অংশগ্রহণকারীরা চৈত্র মাস বাড়ির বাইরে শিব মন্দিরে অবস্থান করেন। এ সময় তারা লাল কাপড় পরে সন্ন্যাসীর মতো বিশেষ ভাবে জীবনযাপন করেন। তাদের ভক্ত বলা হয়ে থাকে। তারা শিব এবং গৌরী সাজিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গাজনের গান গায়। এ সময় মানুষ চাল-সবজি ও আর্থিকভাবে সহায়তা দিয়ে থাকেন। এই সহায়তা দিয়ে চড়ক পূজার আয়োজন করা হয়।

চড়ক পূজার বিশেষত্ব হলো খালি পায়ে ভক্তরা আগুনের মধ্য দিয়ে হাঁটা-চলা করেন, পিঠে বিশাল আকারের বরশি গেথে চড়ক গাছে ঝুলে থাকেন।

চড়ক পূজার দিন তান্ত্রিক মন্ত্র দ্বারা ১জন সন্ন্যাসীর পিটে লোহার বড়শী গেঁথে চড়ক গাছে বেঁধে ঘোড়ানো হয়। সন্ন্যাসীদের ভাষায় এ ধরনের শারীরিক কসরত জীবিত মানুষ ভোগ করে আধ্যাত্মিক শক্তি বলে।

এই চড়ক পূজা দেখতে উপজেলার বিভিন্ন জায়গা দেখে হাজারও ভক্তবৃন্দের পদচারণায় কানায় কানায় ভরে যায় মন্দির চত্বর । উপজেলার বাইরের বিভিন্ন লোকজন চলে আসেন এ পূজায় আশীর্বাদ নিতে।

চড়ক পূজা কমিটির পরিচালক আনন্দ ঋষি জানান, দীর্ঘদিন ধরে দশভূজা বাড়ি মন্দির চত্বরে চড়ক পূজা করে আসছি। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে আমরা এ চড়ক পূজা করি। প্রতিবছরই চরক ঘোরানো হয়। বিভিন্ন জনের মনোবাসনা পূর্ণসহ অনেক আশা-আকাঙক্ষা পূর্ণ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে সনাতন ধর্মের লোকজন চলে আসেন এই চড়ক পূজায়। ধর্মীয় এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে ভক্তদের আর্থিক সহযোগীতায় অনুষ্ঠিত হয় এই পূজা।